পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এদিন কোল ব্লকের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে নবান্নে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এদিন প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে। তবে একটি বিষয় ঠিক হয়েছে। ১১টা মৌজা নিয়ে এই কয়লা ভাণ্ডার রয়েছে। সেখানে প্রায় চার হাজার মানুষ বসবাস করেন। তার মধ্যে ৪০ শতাংশ আদিবাসী ভাই-বোন। বাসিন্দাদের প্রত্যেকের জীবন-জীবিকার সুষ্ঠু ব্যবস্থা এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ করেই কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই কাজ হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। দীর্ঘ তিন বছর টালবাহানার পর গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বীরভূমের এই কোল ব্লক রাজ্যের কাছে হস্তান্তর করে কেন্দ্র সরকার। ২১০ কোটি মেট্রিক টনেরও বেশি কয়লা সঞ্চিত রয়েছে এই ভাণ্ডারে। যা আগামী ১০০ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ রাজ্য তথা দেশের নানা কাজে আসবে। খনি বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘এ’ থেকে ‘জি’ পর্যন্ত মানের কয়লা রয়েছে এখানে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোল ব্লক থেকে কয়লা উত্তোলন ঠেকাতে ইতিমধ্যেই বহিরাগত কিছু লোকজন ওই এলাকায় গিয়ে লোক খেপাতে শুরু করেছে। নানাভাবে প্ররোচিত করে স্থানীয় বাসিন্দাদের এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ইন্ধন জোগাচ্ছে। এরকম একটা পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পুনর্বাসন এবং জীবন-জীবিকার সুষ্ঠু ব্যবস্থা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট অবস্থান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। প্রসঙ্গত, মোট ১১,২২২.৫ একর জুড়ে বিস্তৃত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ভাণ্ডার থেকে কয়লা উত্তোলনের পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায় ভূগর্ভে প্রায় ৫০০ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা পাথরের স্তর। সেই স্তর কেটে কয়লা উত্তোলনের জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম লিমিটেড (ডব্লুবিপিডিসিএল) পোল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার খনন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, উত্তোলনের বাধা দূর হলে বছরে তিন থেকে চার কোটি টন কয়লা তোলা যাবে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে চাই না। কারও ভয় পাওয়ার বা চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। সব পরিবারের জীবন-জীবিকা আর পুনর্বাসন চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রকল্পে হাত দেব না। কারও কোনও অসুবিধা হবে না। স্থানীয় মানুষকে যুক্ত করেই এই কাজ হবে। আমি নিজে সবার সঙ্গে কথা বলব। আদিবাসীদের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও কথা হবে। মানুষকে বিব্রত করে কোনও কাজ নয়, এটা আমাদের সরকারের ঘোষিত নীতি। মমতা বলেন, যে ১১ হাজার একরের বেশি জমি নিয়ে এই কোল ব্লক, তার মধ্যে প্রায় দু’হাজার একর সরকারি খাস জমি। বাকি ন’হাজার একর রায়ত জমি। এছাড়াও পাঁচ শতাংশ বনাঞ্চল রয়েছে। এইগুলি সবই লাগবে প্রকল্পের জন্য। বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের সঙ্গেই অন্য জায়গায় বনসৃজন করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কয়লা উত্তোলনের জন্য পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র লাগবে। বায়ূ দূষণ পরিমাপের জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বীরভূমে একটি দপ্তর গড়বে। মমতা বলেন, এই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের কাছে আমাদের ৫০ কোটি টাকা গ্যারান্টি মানি জমা দিতে হবে। পরে ওরা (কেন্দ্র) তা ফেরত দেবে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এর জন্য ১০০ কোটি টাকা দিচ্ছে। এর মধ্যে ৫০ কোটি কেন্দ্রকে দিয়ে বাকি ৫০ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে অন্য কাজে লাগানো হবে। মমতার কথায়, সব মিলিয়ে লক্ষাধিক কর্মসংস্থান হবে। যেমন প্রযুক্তিবিদরা চাকরি করবেন, তেমনই আবার কয়লা খনি আর পাথর খাদানে স্থানীয় মানুষও কাজের সুযোগ পাবেন।