বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য যে জনমতেরই প্রতিফলন, তার প্রমাণ প্রশাসনিক বৈঠকের সভাস্থল জুড়ে নাগাড়ে চলা করতালি। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, নবান্নের গ্রিভ্যান্স সেল আর ‘দিদিকে বলো’ চালু হওয়ার পর সাধারণ মানুষের যে সমস্ত অভিযোগ জমা পড়ছে, তার ২৫ ভাগই সড়ক পরিবহণ এবং তাকে ঘিরে পুলিসের জুলুম সংক্রান্ত। ট্রাফিক আইনের নামে পুলিসের অতিসক্রিয়তার জেরেই গত লোকসভা ভোটে বেসরকারি পরিবহণ ব্যবসায় যুক্তরা এবং প্রাইভেট গাড়ি চালকদের একটা বড় অংশ যে তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, তাও উঠে এসেছে বিশ্লেষণে। এদিন প্রশাসনিক বৈঠক শেষে দীঘার একটি আদিবাসী গ্রামে জনসংযোগে যান মমতা। পথে একটি দোকানে নিজে হাতে চা তৈরি করে খাওয়ান সবাইকে। শোনেন স্থানীয়দের অভাব-অভিযোগ।
তার আগে প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, থানার ওসি, আইসি’দের একাংশের অঙ্গুলিহেলনে এসব অনৈতিক কাজ চলছে। টাকা তোলানো হচ্ছে সিভিক ভলান্টিয়ারকে দিয়ে। ছয়-আটজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এতগুলো কেস দিতেই হবে। আর ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণের। এই প্রবণতা বাড়ছে। অথচ সিভিক ভলান্টিয়াররা ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ওয়াকিবহালই নন। ট্রাফিক কেসের জ্বালায় মানুষ অতিষ্ঠ। এসব বন্ধ করতেই হবে। আগে কলকাতার পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মাকে বলেছি, এবার ডিজি বীরেন্দ্রকে বললাম।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, সব জেলার এসপি’কে নিয়ে জরুরি বৈঠক করুন। কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারি চালান। প্রয়োজনে একটা টাস্ক ফোর্স গড়ে নোডাল অফিসার ঠিক করুন। জাতীয় ও রাজ্য সড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগান। তাতে যেমন দেখা যাবে, কে বা কারা টাকা তুলছে, তেমনই কোনও অপরাধ হলেও, দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে সুবিধা হবে। ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফকে’ সামনে রেখে বিস্তর কেস দিয়ে সাধারণ মানুষকে নাজেহাল করার আক্ষেপও এদিন ফুটে উঠেছে পুলিসমন্ত্রীর কথায়। মমতা বলেন, ওসি, আইসি এবং বিডিওরা সরকারের মুখ। তাঁরা কেউ খারাপ কাজ করবেন, আর বদনাম হবে রাজনীতির লোকজন আর সরকারের, এটা কী করে চলবে! মুখ্যমন্ত্রীর নিদান, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টা দেখুন। রাফ ড্রাইভিং বন্ধ করাটা জরুরি। সাধারণের স্বার্থেই তাঁদের সতর্ক করুন। কিন্তু কোনও কারণে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে ফেলেছে, তাঁকে প্রথম দু’বার সতর্ক করুন। তাতেও না মানলে তৃতীয়বার কেস দিন।
পুলিসের যে অংশের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, তাঁদের জন্য আচরণবিধিও ঠিক করে দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, আইন মেনে ভালো কাজ করুন। দেখবেন, শরীর এবং মন দু’টোই ভালো থাকবে। চাকরি সহ নানা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে সাধারণের থেকে টাকা তোলার চক্রে নাম জড়িয়েছে শাসকদলের কয়েজকনের। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, সরকার কাউকে এর জন্য অনুমোদন দেয় না, দেয়নি। এসব বলে যারা টাকা চাইছে, জানবেন তারা চিটিংবাজ। তাদের ধরে পুলিসে দিন।