নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সরকারি পাঠ্যক্রম থেকে পড়াশোনা, তাও ডায়াবেটিসের মতো এখন প্রায় প্রতিটি গৃহস্থবাড়িতে থাকা অসুখের মোকাবিলায় পড়াশোনা করেও সরকারি স্তরে কাজের সুযোগ নেই। এমনকী রাজ্য সরকার নির্দিষ্টস্তরের কর্মী বা ‘ক্যাডার’ হিসেবেও গণ্য করছে না। এমনই অভিযোগ চার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্টেট মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টির আওতায় আড়াই বছরের ডিপ্লোমা পাঠ্যক্রম করা ছাত্রছাত্রীদের। পাঠ্যক্রমটির নাম ডিপ্লোমা অব ডায়াবেটিস কেয়ার অ্যান্ড টেকনোলজি বা ডিডিসিটি। ২০১৩ সাল থেকে এই পাঠ্যক্রমে পড়াশোনা শুরু হয়। বর্তমানে পঠনপাঠন চলছে পিজি, আর জি কর, মেডিক্যাল কলেজ এবং এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রায় ৪০-৪৫ জন ছাত্রছাত্রী পাঠ্যক্রম শেষ করলেও সরকারিস্তরে কাজের কোনও সুযোগ পাচ্ছেন না। এমনই অভিযোগে সরব হয়েছেন তাঁরা। মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ডায়াবেটিস কেয়ার অ্যান্ড টেকনোলজি) বা ডায়াবেটিস এডুকেটর— এই নামে সরকারিস্তরে নির্দিষ্ট কর্মী হিসেবে অন্তর্ভুক্তিকরণের দাবিতে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডাঃ দেবাশিস ভট্টাচার্য, স্টেট মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টি’র রেজিস্ট্রার ডি কে ঘোষ প্রমুখকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ব্যানারে পাঠানো হয়েছে সেই চিঠি। শুধু তাই নয়, এইসব মেডিক্যাল কলেজের এন্ডোক্রিনোলজি’র প্রধানরা এইসব ছাত্রছাত্রীদের জন্য সরব হয়েছেন। মেডিক্যালের এন্ডোক্রিনোলজি’র প্রধান ডাঃ অনিমেষ মাইতি তো স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) দেবাশিসবাবুকে চিঠি পাঠিয়ে এই পাঠ্যক্রম থেকে পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থেকে তিনজন ডায়াবেটিস এডুকেটর চেয়েছেন। এইসব ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে দপ্তরের হস্তক্ষেপ চেয়ে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছেন পিজি’র এন্ডোক্রিনোলজি’র প্রধান ডাঃ শুভঙ্কর চৌধুরী, এন আর এস-এর বিভাগীয় প্রধান ডাঃ নীলাঞ্জন সেনগুপ্ত প্রমুখ।
রবিবার এ প্রসঙ্গে টিএমসিপি’র ডিডিসিটি ইউনিটের নেতা নীলেন্দু মাইতি বলেন, আমরা ইনসুলিন, ইনসুলিন পাম্প ও বিভিন্ন প্রযুক্তি, সুগারের রোগীদের পায়ের যত্ন, কিডনির যত্ন, চোখের যত্ন, হার্ট কেয়ার, মানসিকভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো, ডায়েট ম্যানেজমেন্ট সহ অজস্র বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছি। অথচ সরকারি স্তরে আমাদের কোনও ক্যাডারেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রী ও দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দেশের সাত কোটির বেশি রোগী সুগারে আক্রান্ত। রাজ্যেও লক্ষ লক্ষ। অথচ এ বিষয়ে পড়াশোনা করেও কদর না পাওয়া খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এ বিষয়ে পিজি’র এন্ডোক্রিনোলজি’র প্রধান শুভঙ্করবাবু বলেন, যেভাবে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, সেখানে সহযোগী হিসেবে এই নব্যশিক্ষিত টেকনোলজিস্টরা যথেষ্টই কাজে আসতে পারেন। তাই বিষয়টি দপ্তরের নজরেও এনেছি। তৃণমূলপন্থী ওয়েস্টবেঙ্গল প্রোগ্রেসিভ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর অন্যতম রাজ্য সম্পাদক সমিত মণ্ডল বলেন, ডায়াবেটিস এডুকেটর, অপারেশন থিয়েটার টেকনোলজিস্ট সহ বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণে এখনও সরকারি চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। অথচ এগুলি জরুরি। আমাদেরও সরকারের কাছে দাবি রইল এঁদের জন্য।