কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
লোকসভা ভোটে চরম বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে প্রত্যেক রাজ্যেই এখন সিপিএম নেতৃত্ব বৈঠক করছে। আগামী আগস্টে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি এব্যাপারে আলোচনার পর তাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক লাইন অদলবদলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। যদিও দুই ক্ষেত্রেই মূল কাঠামোর তেমন কোনও পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম। জাতীয় স্তরে বিজেপি’র মোকাবিলা করতে কংগ্রেস সহ অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে একত্রে রাস্তায় নামার পরিকল্পনা করেছে তারা। এর মধ্যে ইভিএম বিতর্ককে অন্যতম ইস্যু হিসেবে তারা বেছে নিয়েছে। যেহেতু ইভিএমের বদলে ব্যালটে ভোট করার দাবিতে হালে প্রবল সরব হয়েছেন মমতা, তাই সেই যৌথ কর্মসূচিতে তৃণমূল থাকলে তাঁদের আপত্তি থাকবে না বলে সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি মঙ্গলবার জানিয়েছেন। তবে বাংলার ক্ষেত্রে দল যে বিজেপি এবং তৃণমূলের সমান বিরোধিতা চালিয়ে যাবে, তাও স্পষ্ট করে দেন তিনি।
সাংবাদিক বৈঠকে ইয়েচুরি বলেন, ইভিএম নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। গত লোকসভা ভোটে অন্তত ৩০০টি কেন্দ্রে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটের ভোটের হিসেব নিয়ে গরমিলের অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন কমিশন ভিভিপ্যাটের তথ্য এখন জানাতে অস্বীকার করছে। সবচেয়ে বড় কথা, যে সব রাজ্যে ইভিএমে বিজেপি বাজিমাৎ করেছে, সেখানে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েতে ব্যালটের ভোটে ধরাশায়ী হয়েছে তারা। ফলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা বিরোধী দলগুলি ঠিক করেছি, লোকসভার চলতি অধিবেশনের পর এই ইস্যুতে আন্দোলনের ব্যাপারে আলোচনায় বসব। যেহেতু এর আগেও ইভিএম সহ বেশ কিছু ইস্যুতে বিজেপি তথা কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিবাদের মঞ্চে তৃণমূল শামিল হয়েছে, তাই এক্ষেত্রেও তারা থাকলে আমাদের আপত্তির কিছু নেই। কারণ, এটি কোনও রাজনৈতিক জোট নয়। এই ইস্যুতে বিজেপি চাইলে তারাও স্বাগত এই মঞ্চে।
সীতারাম বলেন, এরাজ্যের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে ব্যালটে ভোট হলে কী হয়, সেটা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রত্যক্ষ করেছে মানুষ। ৩৪ শতাংশ আসনে কোনও ভোট হয়নি। প্রায় দু’কোটি মানুষ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ভোটগ্রহণের সময় শুধু নয়, তার আগে এবং পরেও রিগিং হয়েছে। এক অভূতপূর্ব নজির তৈরি করেছিল বাংলার শাসক দল। গোটা দেশ সে কথা জানে। তাই গণতন্ত্র বা ভোট লুঠের বিষয়ে তাদের কথা বলা মানায় না। আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে তৃণমূলের আন্তরিকতারও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তা নাহলে গত আট বছর তাদের রাজত্বে রাজ্যে আরএসএস-এর শাখা ৪২৫টি থেকে ১,৪২৭টিতে পৌঁছেছে বিনা বাধায়। সরকারি স্কুলে শাখার সশস্ত্র প্রশিক্ষণ পর্যন্ত হচ্ছে। বিগত বিধানসভার ভোটের পর রাজ্যে ৪৯টি সাম্প্রদায়িক গোলমাল হয়েছে। এই সবের নিরিখে আমরা বিজেপি বিরোধী আন্দোলনে রাজ্যে কখনওই তৃণমূলের সঙ্গে যাওয়ার কথা ভাবতে পারি না।