বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এমকম (বিএড) অনিল অ্যাকাউনটেন্সি’র শিক্ষক হিসেবে কলকাতা বড়বাজারের শ্রী মহেশ্বরী বিদ্যালয়ে যোগ দেন। স্কুল পরিচালন কর্তৃপক্ষ তাঁর চাকরি ‘কনফার্ম’ করে চাকরি অনুমোদনের জন্য যাবতীয় নথি ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে পাঠিয়ে দেয় কলকাতার জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে। কিন্তু, অনুমোদন না আসায় তিনি ২০০৮ সালে প্রথমবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিলেও জেলা স্কুল পরিদর্শক আবেদনটি খারিজ করে দেন। ফলে ২০১০ সালে ফের তিনি হাইকোর্টে আসেন বিচার চাইতে। আবারও আদালতের রায় তাঁর পক্ষে গেলেও এবার কমিশনার অব স্কুল এডুকেশন তাঁর আবেদন খারিজ করেন। বাধ্য হয়ে ২০১২ সালে তিনি তৃতীয়বার হাইকোর্টে আসেন। ফের কমিশনারকে বিষয়টি দেখতে বলা হয় এবং তাঁর আবেদন বাতিল হয়। ফলে ২০১৪ সালে হয় চতুর্থ মামলা। এবারও হাইকোর্টের নির্দেশ মতো কমিশনার বিষয়টি বিবেচনা করে আবেদনটি খারিজ করেন। সেই সূত্রে আবার মামলা। এবারও পূর্ব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। কিন্তু, এবার ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল কমিশনারের সেই সিদ্ধান্ত তিনি চ্যালেঞ্জ করেন। আবেদন বাতিল করার কারণ হিসেবে বলা হয়, ওই স্কুলে বাড়তি শিক্ষক রয়েছে। দ্বিতীয়ত, ২০১৭-১৮ সালে সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমেছে।
এই প্রেক্ষাপটে মামলকারীর আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতকে তথ্যপ্রমাণ সহ জানান, বিদ্যালয়টির একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর বাণিজ্য শাখার শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে স্কুল পরিচালন কর্তৃপক্ষ কমিশনারকে কিছু ক্ষেত্রে ভুল পথে চালিত করেছে। জানানো হয়, ওই শাখায় অন্তত দু’জন শিক্ষক রয়েছেন, যাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিকম (অনার্স) (বিএড)। ফলে আইন অনুযায়ী, উচ্চতর যোগ্যতাসম্পন্ন অনিলবাবুর চাকরি সর্বাগ্রে অনুমোদিত হওয়া উচিত ছিল। তৃতীয়ত, স্কুলটির নথি অনুযায়ী, সেখানে বাণিজ্য শাখার সাত শিক্ষকের একজন অবসর নিয়েছেন, একজন অন্য বিষয় পড়ান। আরও দু’জন চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে অন্যত্র বদলি হয়েছেন। অথচ, ওই শাখায় সাতটি অনুমোদিত শিক্ষক পদ রয়েছে।
অন্যদিকে, স্কুলের পক্ষে কমিশনারের সিদ্ধান্ত সমর্থন করে বলা হয়, সেখানে ওই শাখায় পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক রয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে আদালত তার রায়ে বলেছে, ‘সাত অনুমোদিত পদের এক শিক্ষক অবসরপ্রাপ্ত, একজন পড়ান অর্থনীতি, দুই শিক্ষকের স্নাতকোত্তর যোগ্যতা নেই। সেখানে স্নাতকোত্তর যোগ্যতাসম্পন্ন মামলাকারীর চাকরি অনুমোদন না করার মধ্যে কোনও যুক্তি নেই। এমনকী স্কুলটির পরিবর্তিত পরিস্থিতিকেও বিবেচনায় আনা হয়নি। তাই কমিশনারের সিদ্ধান্ত খারিজ করা হল।’