বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ দিয়ে তাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগেও বহুবার তিনি এই কথা বলেছেন। ওই নির্দেশের পরেই সমবায় দপ্তর এব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে। সমবায় দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে অর্থাৎ ২০১৯-’২০ সালে লক্ষাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে সমবায় দপ্তর। এতে গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ অনেক ত্বরান্বিত হবে বলেই সমবায় দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ দিয়ে তাঁদের স্বনির্ভর করার জন্য প্রতিটি রাজ্যে প্রকল্প চালু আছে। কিন্তু, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এই দপ্তরকে আরও সক্রিয় করতে উদ্যোগী হয়েছেন। প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা তিনি ঘোষণা করেছেন। এবার নাবার্ডও স্বীকার করল, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উন্নয়নে পশ্চিমবঙ্গ অনেক এগিয়ে আছে। আাগামীদিনে আমরা আরও বেশি সংখ্যক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ঋণ দিয়ে তাদের আর্থিক দিক থেকে স্বাধীন করে তুলব।
নাবার্ডের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে মোট ২ লক্ষ ১৮ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী আছে। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার গোষ্ঠীকে বাছাই করে ঋণ দেওয়া হবে। নাবার্ডের হিসেবে বলছে, যারা শুধুমাত্র সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির মাধ্যমে ঋণ পাবে, তাদেরই এই তালিকায় ধরা হবে। সেই মতো এরাজ্যে ৯৭ হাজারের কিছু বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই ঋণ পেয়েছে। বাকিরা আরবান কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক ও জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণ পেয়েছে। কিন্তু তাদের এই তালিকায় ধরা হয়নি। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ যেখানে ৯৭ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই ঋণ পেয়েছে, সেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা মহারাষ্ট্রে ঋণ পেয়েছে ৪৪ হাজার ৫১০টি গোষ্ঠী। তৃতীয় স্থানে থাকা কর্ণাটক ঋণ দিয়েছে ৩২ হাজার ৪৩৭টি সংস্থাকে। কেরলে ঋণ পেয়েছে মাত্র ৭ হাজার ১৭৯টি এবং গুজরাতে পেয়েছে ৭৭৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। সমবায় দপ্তরের অফিসাররা বলেছেন, প্রতি বছরই আমরা এই রাজ্যে সমবায় সপ্তাহ পালন করে থাকি। সেই মতো প্রতি এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করে তুলতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। তারই অঙ্গ হিসেবে এবার দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে এই প্রকল্পে অর্ন্তভূক্ত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
সমবায় দপ্তরের অফিসাররা বলেছেন, আগামী আর্থিক বছরে প্রায় দেড় লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বকেয়া ঋণ আদায়ের দিকেও জোর দেওয়া হবে। এর আগে রাজ্যের সমবায় দপ্তর কখনও জাতীয় স্তরের এই সম্মান পায়নি। এবার তার ব্যতিক্রম হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সমবায় দপ্তর ৯ শতাংশ হারে ঋণ দেয়। ওই সমবায় সমিতি সম্পূর্ণ ঋণ ফেরত দিয়ে দিলে সমবায় দপ্তর তাদের সাত শতাংশ সুদের টাকা ফিরিয়ে দেয়। অর্থাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি কার্যত দু’ শতাংশ হারে এই ঋণ পেয়ে থাকে। অন্যদিকে, কৃষি ঋণের ক্ষেত্রে সাত শতাংশ হারে ঋণ দেওয়া হয়। ঋণ শোধ করে দিলে সমবায় দপ্তর তাদের তিন শতাংশ টাকা ফিরিয়ে দেয়। অর্থাৎ তারা মাত্র চার শতাংশ হারে ঋণ পায়। এতে কৃষকদের মহাজনের কাছে চড়া হারে ঋণ নিতে হয় না।