পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
চর্মনগরীর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এলাকার নতুন নামকরণও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখানে আসার পথে অমিতদা (অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র) বলছিলেন, কী বিরাট কর্মযজ্ঞ চলছে, আর তা আরও কত বড় হতে চলেছে। একটা নতুন নাম দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। আজ থেকে চর্মনগরীর নতুন হল—কর্মদিগন্ত। লোকসভা ভোট ইস্তক মূল কলকাতার বাইরে এদিনই ছিল মমতার প্রথম সরকারি অনুষ্ঠান। আর সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরে এহেন বিপুল বিনিয়োগ প্রস্তাব যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিশেষ করে গেরুয়া শিবিরের পোস্টার বয় যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য থেকে পাট গুটিয়ে বিনিয়োগকারীদের কলকাতায় আসাটা রাজনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ।
কানপুর, চেন্নাই থেকে চর্মশিল্পের পাট গুটিয়ে যে বা যাঁরা ‘কর্মদিগন্তে’ বিনিয়োগ করতে আসছেন, জমি পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের ‘বিশেষ ছাড়’ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভিনরাজ্যের বিনিয়োগকারীরা এখানকার অতিথি। তাঁদের জন্য কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। এখানে অভিষেক আর বৈশালী ডালমিয়াদের (চর্মনগরীর ডেভেলপার প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়ার পুত্র ও কন্যা) জমি ছিল। অনুরোধ করেছিলাম, বিশেষ ছাড় দিয়ে জমি বিক্রি করতে। ওঁরা কথা রেখেছেন। এরপরই ডালমিয়াদের কাছে তাঁর আব্দার, কানপুর থেকে যে বা যাঁরা বিনিয়োগ করতে আসবেন, জমি কিন্তু তোমাদেরই দিতে হবে। সায় দেন অভিষেক-বৈশালী। মমতা বলেন, এখানে সরকারের কোনও জমি নেই। বিনিয়োগকারীদের জমি কিনে নিতে হয়। কানপুর সহ বাইরের বিনিয়োগকারীদের বিশেষ ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে স্থানীয় উদ্যোগী, যাঁরা ট্যানারি বানাতে চাইছেন, তাঁদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। আপনারা জমি কিনুন, ‘স্পেশাল ইনসেনটিভ’ দিয়ে অতিথিদের সমান সুযোগই জুটবে আপনাদের। সরকারের দায়িত্ব আপনাদের দেখা। স্পেশাল ইনসেনটিভ দেবে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় করতালি আর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে সভাস্থল। বিনিয়োগ মানচিত্রে ‘কর্মদিগন্ত’-এর অবস্থান নিঃসন্দেহে স্বস্তি দিয়েছে রাজ্যকে। বিনিময়ে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানও আশ্বস্ত করেছেন বিনিয়োগকারী এবং চর্মশিল্পের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে। মূল কলকাতার সঙ্গে কর্মদিগন্তকে জুড়তে ছ’টি বাস এদিন তুলে দিয়েছেন চর্মনগরীর কর্তা ইমরান খানের হাতে। শিফটওয়াড়ি আরও বাসের ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন পরিবহণ দপ্তরকে। কর্মদিগন্ত নামে নতুন বাস স্টপ এবং গোটা প্রকল্প তদারকির জন্য নোডাল এজেন্সি এবং হেল্প ডেস্ক চালু করারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মোবাইল সংযোগ জোরদার করতে বাড়তি টাওয়ার এবং গোটা এলাকাকে সিসিটিভির আওতায় আনার কাজ দ্রুত বাস্তবায়িত করতে বলেছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে রাজ্যের তিন মন্ত্রী অমিত মিত্র, ফিরহাদ হাকিম এবং জাভেদ আহমেদ খানের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মলয়কুমার দে, স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ শিল্প দপ্তরের কর্তারা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেদার এক্সপোটার্স সংস্থার সর্বভারতীয় কর্তা আকিল আনোয়ার। চর্মশিল্পে গোটা বিশ্বে কলকাতার অবস্থানের কাহিনী শোনান তিনি। বলেন, গোটা বিশ্বে ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্লাভস যা তৈরি হয়, তার ৯৮ শতাংশই বানায় এই শহর। এমনকী ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে ভারত থেকে চামড়ার যে সামগ্রী পাঠানো হয়, তাতে কলকাতার শেয়ার ৪৭ শতাংশ। আকিল সাহেবের এই তথ্যে অন্য সবার সঙ্গেই হাততালি দিয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও।