বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গত ২০১৪ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে অর্থ দপ্তর আইএফএমএস চালু করে। দফায় দফায় এর মাধ্যমে বিভিন্ন মডিউল চালু হতে থাকে। যে প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত আছে। ই-বন্টন, ই-প্রদান, ই-বিলিং প্রভৃতি চালু হয়। ই-প্রদান (ই-পেমেন্ট) মডিউলের মাধ্যমে সরকারি কর্মীদের বেতন ছাড়াও ঠিকাদারদের বিলের টাকা মেটানো, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প যেমন কন্যাশ্রী, রপশ্রী, যুবশ্রী প্রভৃতির সুবিধা প্রাপকদের টাকা দেওয়া হয়েছে। ট্রেজারি থেকে সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাচ্ছে। সরকারি দপ্তর ও সংস্থাগুলিকে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ট্রেজারি থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে ই-বন্টন মডিউলের মাধ্যমে। সরকারি কর্মীদের চাকরি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় এখন পরিচালিত হয় অনলাইনে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এইচআরএমএস)-এর মাধ্যমে। কর্মীর ছুটি, বদলি, পদোন্নতি থেকে শুরু করে কাজে যোগদান ও অবসর নিয়ন্ত্রিত হয় এই বিশেষ মডিউলটির মাধ্যমে।
উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যাঙ্কে আ্যকাউন্ট খুলে ফেলে রাখা প্রবণতা রয়েছে সরকারি দপ্তরগুলির। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে আইএফএমএস। অর্থ দপ্তর থেকে আর্থিক উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খরচ করতে না পেরে তা পিএল, এলএফ প্রভৃতি অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলে রাখার দপ্তরগুলির মধ্যে প্রবণতা ছিল। কোটি কোটি টাকা এভাবে পড়ে থাকত। ব্যাঙ্কে ওই টাকা রেখে যে সুদ আসত, সেটা সরকারি দপ্তরগুলি অপ্রয়োজনীয় খাতে খরচ করত। বছর খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পড়ে থাকা এই টাকা কাজে লাগানোর জন্য অর্থ দপ্তরকে নির্দেশ দেন। এরপর অর্থ দপ্তর এব্যাপারে একের পর এক নির্দেশিকা জারি করতে থাকে। বিভিন্ন দপ্তরের কাছে পড়ে থাকা টাকা অর্থ দপ্তরের কাছে ফেরত আসতে শুরু করে। এখনও সেই প্রক্রিয়া চলছে। গত আর্থিক বছরে বরাদ্দ হওয়া যে টাকা দপ্তরগুলি খরচ করতে না পেরে এখনও ফেলে রেখেছে, তা জুলাই মাসে ফেরত দিতে হবে। আইএফএমএস ব্যবস্থায় আর্থিক লেনদের অনলাইনে হয়ে যাওয়ায় অর্থ দপ্তর থেকে বিভিন্ন দপ্তরের বরাদ্দ টাকা খরচের উপর নজরদারি রাখার কাজেও সুবিধা হয়েছে।
প্রকল্পে বরাদ্দ টাকার উপর আরও নজরদারি রাখার জন্য আইএফএমএসের অধীনে স্কিম ওয়াইজ ব্যাঙ্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এসবিএমএস) মডিউল সম্প্রতি চালু করা হয়েছে। এতে একদম নীচেরস্তর পর্যন্ত সরকারি অফিসে উন্নয়নমূলক প্রতিটি প্রকল্পের জন্য আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। কোন কোন ব্যাঙ্কে ওই অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে, সেটাও অর্থ দপ্তর নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। অর্থ দপ্তরের বরাদ্দ অনুযায়ী টাকা ট্রেজারি থেকে ওই অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে যাবে। যে দপ্তর বা অফিসের আওতায় এই কাজ হচ্ছে, তারা ওই অ্যকাউন্ট থেকে প্রকল্পের যাবতীয় খরচ করবে। অর্থ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর অনলাইনে নজর রাখাতে পারবে কোন অফিস কোন প্রকল্পে কত টাকা খরচ করছে। সরকারি সূত্রের খবর, এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, কৃষি দপ্তরে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য গত আর্থিক বছরে বরাদ্দ হওয়ার প্রায় ৯০০ কোটি টাকা পড়ে আছে।