বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রাজ্য সরকার দুটি সংস্থার মাধ্যমে রেশন দোকানে ইপিওএস যন্ত্র বসাতে উদ্যোগী হয়েছে। ওই দুটি সংস্থা যন্ত্র কিনে সরবরাহ করেছে। রক্ষণাবেক্ষণের কাজও তারা করবে। যন্ত্র সরবরাহ থেকে শুরু করে চালানোর পুরো দায়িত্ব রাজ্য খাদ্য দপ্তর তাদের দিয়েছে। এর বিনিময়ে ওই সংস্থা রেশন দোকানে ইপিওএসের মাধ্যমে প্রতি কেজি চাল ও গম বিক্রির উপর ১১ পয়সা করে কমিশন পাবে। ইপিওএস যন্ত্র চালু করলে যে অতিরিক্ত ১৭ পয়সা করে কমিশন ডিলারদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নিয়েছে, তার থেকে এটা দেওয়া হবে। যদিও ওই কমিশনের অর্ধেক বহন করতে হবে রাজ্য সরকারকে। যে দুটি সংস্থা যন্ত্র সরবরাহ করেছে, তারাও এগুলি চালু করার জন্য রাজ্য সরকারকে চাপ দিচ্ছে। কারণ এগুলি চালু না হওয়া পর্যন্ত প্রতি কেজিতে ১১ পয়সা করে কমিশন তারা পাবে না।
ইতিমধ্যে রাজ্যের অধিকাংশ রেশন ডিলার ইপিওএস যন্ত্র হাতে পেয়ে গিয়েছেন। খাদ্য দপ্তরের উদ্যোগে এটি ব্যবহার করার জন্য প্রশিক্ষণ পর্বও চলছে। কিন্তু রেশন ডিলারদের সংগঠন রাজ্য সরকারের কাছে দাবি করেছে, কুইন্টাল প্রতি কমিশন ৫৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫০ টাকা বা মাসে ডিলারদের অন্তত ৩০ হাজার টাকা আয়ের ব্যবস্থা করলে তবেই এই যন্ত্র চালু করা হবে। অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের নেতৃত্বে ডিলাররা রাস্তায় নেমে আন্দোলনও শুরু করেছেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, দাবি না মানলে যন্ত্র চালু করার কোনও প্রশ্নই উঠছে না। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য জানিয়েছেন, একসঙ্গে না হলেও কয়েক পর্যায়ে ইপিওএস চালু করা হবে। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে রাজ্যের প্রায় ২০ হাজার রেশন দোকানে এটা চালু করতে চাইছে খাদ্য দপ্তর।
পশ্চিমবঙ্গে এই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক। গত ৯ জুলাই কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের ডিরেক্টর (পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন) ডি কে গুপ্ত রাজ্যের ফুড কমিশনার মনোজ আগরওয়ালকে একটি চিঠি দেন। এতে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার আগে জানিয়েছিল, ১৭ হাজার ৮৩৫টি ইপিওএস যন্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে এবং রাজ্যের ২৩টি জেলায় এগুলি জুন মাসের মধ্যে চালু হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের বিশেষ পোর্টাল ‘অন্নবিতরণ’ থেকে জানা যাচ্ছে, জুন পর্যন্ত মাত্র ৩১৬টি যন্ত্র চালু হয়েছে। রেশন ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয় করার উদ্যোগের কী হাল, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। ১৭ হাজার ৮৩৫টি যন্ত্র আদৌ চালু হয়েছে কি না, সেটা বোঝাই যাচ্ছে না। পোর্টালে এব্যাপারে কোনও কিছু দেখানো হচ্ছে না। যন্ত্রগুলি এখনও চালু না হলে রাজ্য সরকার অবিলম্বে জানাক কবে নাগাদ তা চালু হতে পারে।
অন্য রাজ্যর তুলনায় যে এব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ পিছিয়ে আছে, সেটাও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের ৮০ শতাংশ রেশন দোকানে এটা কার্যকর হয়ে গিয়েছে। বড় রাজ্যের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গই পিছিয়ে আছে। দেড় বছর আগে রাজ্যে যন্ত্র সরবরাহকারী সংস্থা নির্দিষ্ট হওয়ার পর এই পরিস্থিতি হয়েছে। যন্ত্রটি চালু হলে রেশন ব্যবস্থায় দক্ষতা বাড়বে। তাই অবিলম্বে এই কাজ শুরু করতে হবে রাজ্যকে।