বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রাজ্যপালের ভাষণের উপর বিতর্কের সূচনা করেই কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা ‘কাটমানির’ প্রসঙ্গ টানেন। তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকারের ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পে কাটমানির খেলা হয়েছে। কত সাইকেল দেওয়া হয়েছে, তার হিসেবে গোলমাল আছে। সরকার কখনও বলছে, এক কোটি সাইকেল দেওয়া হয়েছে। আবার কখনও বলছে, ৬৩ লক্ষ সাইকেল দেওয়া হয়েছে। লঝঝড়ে যে সাইকেল দেওয়া হয়েছে, তার দাম বড়জোর ২৩০০-২৪০০ টাকা। কিন্তু সরকার হিসেব দিয়েছে, ৩২০০ থেকে ৩৪০০ টাকায় সাইকেল কেনা হয়েছে। এতে বিশাল কেলেঙ্কারি হয়েছে। আবাসন প্রকল্প গীতাঞ্জলি নিয়েও তিনি অনিয়মের অভিযোগ পেলেন। এরপর বিতর্কের সময় বিরোধী বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা সবুজসাথী সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কাটমানির অভিযোগ তোলেন। কাটমানির টাকা উপরে যায় বলে মন্তব্য করা হয়। কয়েকটি সংস্থার নাম করে কিছু সরকারি কাজের বরাত কেন এরাই পায়, সেই প্রশ্ন তোলেন ইমরান।
সরকার পক্ষের বিধায়করা কাটমানির অভিযোগের জবাব দেন সভায়। তৃণমূলের যোগরঞ্জন হালদার কংগ্রেস বিধায়ককে কটাক্ষ করে বলেন, সুখবিলাসবাবু তো বামফ্রন্ট সরকারের সময় সরকারের বড় আমলা ছিলেন। তিনি তো কাটমানির খেলা ভালো করে জানবেন। কাটমানি কোন সরকারের সময় হয় না? সব সময় থাকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বলেছেন যে কাটমানি নিলে শাস্তি পেতে হবে, তা কি আগে কখনও হয়েছে। তাঁকে সাধুবাদ জানানো উচিত। তৃণমূলের সমীর জানা বলেন, সবুজসাথী নিয়ে আরটিআই করে অভিযোগ আনা উচিত ছিল সুখবিলাসবাবুর। সমীরবাবু ছাড়াও ব্রজমোহন মজুমদার সহ আরও কয়েকজন শাসক দলের বিধায়ক বলেন, চাষিরা এখন ১৭৫০ টাকা কুইন্টাল দরে ধান বিক্রি করতে পারছেন। পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। এখানেও কি কাটামানি আছে? কাটমানির অভিযোগ খণ্ডন করতে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরেন তৃণমৃল বিধায়করা। বামফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী প্রয়াত সিপিএম নেতা তাঁর সরকারকে ঠিকাদার নিয়ন্ত্রিত বলে যে অভিযোগ তুলেছিলেন, সেটাও উল্লেখ করেন তৃণমূল বিধায়করা। তৃণমূলের সমরেশ দাস বলেন, সিপিএম আবার কাটমানির কথা বলছে! ওরা তো লোকসভা ভোটে বিজেপির কাছ থেকে টাকা নিয়েছে।
লোকসভা ভোটের ফলের জন্য তৃণমূলকে কটাক্ষ করে কংগ্রেসের ভূপেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছিলেন, পাহাড় হাসছে। কিন্তু পাহাড়ে তো পদ্মফুল ফুটে গেল। আসলে উন্নয়ন হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী যা ঘোষণা করেছেন, তা বাস্তবায়িত হয়নি। বাম বিধায়করা লোকসভায় তূণমূলের আসন কমার প্রসঙ্গ টানেন। এর পাল্টা হিসেবে শাসক দলের বিধায়করা বলেন, সিপিএম পরিকল্পনা করে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। তৃণমূলের স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূলের ভোট বেড়েছে। সিপিএমের ভোট চলে গিয়েছে বিজেপিতে। আগামী দিনে আপনাদের কী হয়, সেটা আগে দেখুন। বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা ভাটপাড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় গোলমালের জন্য তৃণমূলকে দায়ী করেন। আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ করেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। যা খণ্ডন করে পাল্টা অভিযোগ আনেন তৃণমূল বিধায়করা।