বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রাজ্যপালের ভাষণের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরকার তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেপে ধরতে বিরোধীরা তাঁরই সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যকে হাতিয়ার করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিজের দলের বিধায়ক বা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের একাংশের কাটমানি সংক্রান্ত দুর্নীতি এবং অন্যান্য অপরাধের ঘটনায় জড়িয়ে পড়া নিয়ে সম্প্রতি তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন। শুদ্ধিকরণের লক্ষ্যে তিনি এ নিয়ে বারবার এই সব নেতাদের সতর্কও করছেন ইদানীং। সম্প্রতি দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে এমপি হয়ে যাওয়া এক নেতাকে ‘খুনি’ বলতেও দ্বিধা করেননি তিনি। তাঁকে দলের বিধায়ক পদে টিকিট দিয়ে তিনি ভুল করেছিলেন বলেও কবুল করেছেন। একই সঙ্গে দলের কোন কোন নেতা সরকারি গৃহ নির্মাণ থেকে শুরু করে সমব্যথীর মতো শেষকৃত্যের প্রকল্প থেকে কাটমানি খেয়েছেন, তাও তাঁর অজানা নয় বলে দাবি করেছেন জোড়াফুল নেত্রী। তাঁর এই সব স্পষ্ট বক্তব্যই তাঁকে নিশানা করার জন্য ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে বিরোধী শিবির। বুধবার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে এব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁদের কথায়, মুখ্যমন্ত্রীকে সদনে দাঁড়িয়ে বলতে হবে কতজন খুনি বা কাটমানিখোর বিধায়ক বা নির্বাচিত প্রতিনিধি তৃণমূলে রয়েছে। নাহলে স্রেফ প্রচারের নাটক করলে আমরা ছাড়ব না।
এদিন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকেই অধিবেশনে হতে চলা সম্ভাব্য উত্তাপের প্রাথমিক আঁচ পাওয়া যায়। অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার দাবি সহ নানা বিষয়ে বিরোধীদের প্রাপ্য ন্যায্য অধিকার, টিভি সম্প্রচারের ক্ষেত্রে পক্ষপাতহীন ভূমিকা ইত্যাদি ইস্যুতে অতীতের নজিরের যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সে ব্যাপারে দাবি জানান মান্নানরা। এ নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত মমতা-ঘনিষ্ঠ এক মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের তর্কাতর্কিও হয়। যার জেরে মান্নান সহ বাম-কংগ্রেসের বিধায়ক-প্রতিনিধিরা বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করার উদ্যোগ নেন। অধ্যক্ষ ও কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শেষমেশ শান্ত হন মান্নানরা। তবে অধ্যক্ষকে বৈঠকেই তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়ে আসেন, আগামী দিনে ওই মন্ত্রী উপস্থিত থাকলে তাঁরা সর্বদলীয় বৈঠকে আর অংশ নেবেন না। সাংবাদিক বৈঠকেও তাঁরা সে কথা জানান। পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় পরে বলেন, অধ্যক্ষ বিধি মেনেই অধিবেশন চালান। তাই সর্বদা বিরোধী বা শাসকপক্ষের সব দাবি মানা সম্ভব হয় না। বিরোধীরা বৈঠকে কিছু বিষয়ে তাদের ক্ষোভ জানিয়েছে। আমরাও তাদের ভূমিকা নিয়ে পাল্টা কিছু বিষয় উল্লেখ করেছি। যাইহোক, তাদের পরামর্শগুলি বিবেচনা করা হবে।