বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জুন মাসে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি কম হওয়ায় কৃষি দপ্তর কিছুটা হলেও চিন্তিত। তবে কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা বলছেন, এখনও খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো সময় আসেনি। জুলাই ও আগস্ট মাসে ভালো বৃষ্টি পাওয়া খরিফ চাষের পক্ষে খুব প্রয়োজন। আমন ধানের চারা রোপণ প্রক্রিয়া ১৫ আগস্টের মধ্যে করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
ধানের চারার জন্য বীজতলা তৈরির কাজ জুন মাস থেকে শুরু করে দেন চাষিরা। বীজতলায় চারা তৈরি করতে তিন-চার সপ্তাহ লাগে। সেই চারা বীজতলা থেকে মূল জমিতে রোপণ করা হয়। এবার বৃষ্টি কম হওয়ার জন্য ধানের বীজতলা তৈরির কাজ পিছিয়ে পড়েছে। কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা বলছেন, জুন মাসের প্রথমে বীজতলা তৈরি করে ফেলা গেলে ধান চাষের পক্ষে ভালো হতো। যেখনে সেচের সুবিধা রয়েছে, সেখানে বীজতলা এখন করা যায়। কিন্তু কবে বর্ষা শুরু হবে, তা এখনও অনিশ্চিত থাকায় এতে একটা ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ বৃষ্টি ভালো না হলে ধানের চারা রোপণ করা যাবে না। তখন আবার নতুন করে বীজতলা তৈরি করা হবে।
রাজ্যে প্রায় ৪২ লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। লক্ষ্যমাত্রা অবশ্য এর থেকে কিছুটা বেশি থাকে। রাজ্যে বছরে ধান উৎপাদন হয় আড়াই কোটি টনেরও বেশি। এর মধ্যে দেড় কোটি টন আমন ধান। আমন ধানের চাষ মোটমুটি বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল।
কোনও এলাকায় বৃষ্টি কম হলে কৃষি দপ্তর আমন ধানের বদলে বিকল্প চাষের পরামর্শ দেয়। সেক্ষেত্রে ভুট্টা, ডালজাতীয় শস্য চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। রাজ্য কৃষি দপ্তরের প্রধান আবহাওয়াবিদ মৃণাল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ধানের বদলে বিকল্প ফসলের চাষ করার পরামর্শ দেওয়ার সময় আসতে এখন অনেক দেরি। এখনও হাতে অনেক সময় রয়েছে। এর মধ্যে ভালো বৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়।
তবে জুন মাসে বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে পাট চাষ নিয়ে কিছুটা চিন্তা আছে বলে কৃষি আধিকারিকরা মনে করছেন। কালবৈশাখীর বৃষ্টির উপর নির্ভর করে মার্চ-এপ্রিল মাস থেকে পাট চাষ শুরু হয়ে যায়। অনেক চাষির পাট কেটে নিয়ে ওই জমিতে ধান চাষ করার পরিকল্পনা থাকে। কিন্তু পাটগাছের জন্য মাঠে জলের প্রয়োজন হয়। পাট তোলার পর তা পচানোর জন্য জল লাগে। এই সময় বৃষ্টি না হলে গ্রামে জলাশয় শুকিয়ে যাবে। তাতে পাট পচানোর সমস্যা হতে পারে।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জুন মাসে পরিস্থিতি অনেক ভালো ছিল। সেই সময়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে স্বাভাবিকের থেকে ১৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। উত্তরবঙ্গে অবশ্য স্বাভাবিকের থেকে ৩২ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়। জুন মাসে সার্বিকভাবে গত বছর গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ও উত্তরবঙ্গে যথাক্রমে স্বাভাবিকের থেকে যথাক্রমে ১৮ ও ১৪ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছিল।