গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্যের অন্যতম নামকরা সরকারিক্ষেত্রের এক সিনিয়র সার্জেন জানান, কলকাতার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে সার্জারি, ইউরোলজি, হার্ট সার্জারি, ইএনটি, অর্থোপেডিক, গাইনি, চক্ষু প্রভৃতি বিভাগ ধরলে গড়ে দৈনিক ১০০’র বেশি অপারেশন হয়। জেলা সূত্রের খবর, সেখানকার বড়-মাঝারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতেও কমবেশি রোজ প্রায় ৬০টিরও বেশি প্ল্যানড অপারেশন হয়। রাজ্যে বর্তমানে কলকাতার পাঁচটি এবং জেলায় জেলায় আরও আটটি তুলনায় পুরনো মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। নতুন অনুমোদিত মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা আরও চারটি। কলকাতা এবং জেলার পুরনো মেডিক্যাল কলেজগুলি ধরলেই রাজ্যে ধর্মঘটের ক’দিন আনুমানিক চার হাজার প্ল্যানড অপারেশন বাকি। ক’দিন বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সিও না খোলায় সবশুদ্ধ করাই যায়নি আনুমানিক আরও কমবেশি হাজারের বেশি অপারেশন। সব মিলিয়ে কমপক্ষে পাঁচ হাজারেরও বেশি অপারেশন বাকি পড়ে রয়েছে। এছাড়া হার্ট সার্জারি, ইউরো সার্জারি, জেনারেল সার্জারি সহ বেশ কিছু বিভাগের রুটিন ওয়েটিং-এর লম্বা তালিকা তো রয়েছেই। ফলে শীঘ্রই বা অদূর ভবিষ্যতে ধর্মঘটের জন্য তৈরি হওয়া স্বাস্থ্য সঙ্কট কাটলেও কীভাবে এত ‘ওয়েটিং’ এবং বকেয়া অপারেশনের মোকাবিলা করা যাবে, তা ভেবেও মাথায় হাত চিকিৎসকমহলের একাংশের।
অপারেশন বাকি থাকার জন্য কী পরিমাণ ভুগতে হচ্ছে, শুক্রবার সেকথা জানালেন পিজি হাসপাতালের ভুক্তভোগীরাই।
আমতার বাসিন্দা বাবলু দাসের সঙ্গে কথা হচ্ছিল পিজি চত্বরে। জানালেন, স্ত্রী মায়ারানি দাসের ব্রেস্ট ক্যান্সার। জেনারেল সার্জারি বিভাগে ভর্তি। একবার অপারেশনও হয়েছে। কিন্তু পুরোপুরি সফল হয়নি। ফের অপারেশন করতে হবে। চারদিন আগে ডেট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওটি হয়নি। ফের এদিন অপারেশনের ডেট দেওয়া হয়েছিল। কোথায় অপারেশন? চিকিৎসকদেরই নামগন্ধ নেই, আর ওটি! তিনি বললেন, ১৯ দিন ধরে ভর্তি আছেন স্ত্রী। একটির পর একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হচ্ছে। খুবই কষ্ট পাচ্ছেন। অপারেশন হলে বাড়ি নিয়ে যেতে পারি। ধর্মঘটের জন্য এদিনও অপারেশন হবে না বলে পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হল।
প্রশ্ন উঠেছে, নিজেদের দাবি আদায়ে ধর্মঘট করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু, অপারেশন করবেন তো বড় ডাক্তাররা। শুক্রবারের আগে তো বড় ডাক্তারদের মধ্যে বিশেষ কেউ ইস্তফাও দেননি। তাহলে পরিকল্পনা মাফিক বা প্ল্যানড অপারেশন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন? এক সিনিয়র সার্জেন জানান, ছোট মাঝারি এবং বড় অপারেশন গোটাটাই একটি ‘টিম এফর্ট’। নার্স, টেকনোলজিস্ট, অ্যানাসথেসিওলজিস্ট তো থাকেনই, ইনটার্ন, পিজিটি, সার্ভিস পিজিটি’র মতো জুনিয়র ডাক্তারদের থাকাটাও জরুরি। কারণ, অপারেশনের আগে রোগীকে প্রস্তুত করা, অপারেশনের সময় সহায়তা এবং পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার— সবেতেই তাঁদের কমবেশি প্রয়োজন।