গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পরিস্থিতি দেখে রাজ্যের সিনিয়র ডাক্তারবাবু ও বিভিন্ন মেডিক্যালের বিভাগীয় প্রধানদের উদ্দেশে চিঠি লিখে পরিষেবা সচল করার অনুরোধ জানান মমতা। সন্ধ্যায় সুর নরম করে ফেসবুকে পোস্ট করে জুনিয়র ডাক্তারদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার অনুরোধ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একের পর এক মুমূর্ষু রোগী চিকিৎসা পাচ্ছেন না। কষ্ট পাচ্ছেন। জানি, তিনদিন আগে এনআরএসে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে আহত চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে পাঠানো হয়েছিল। পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত মুখ্যসচিবকেও (স্বাস্থ্য)। আহত ডাক্তারের চিকিৎসার সব খরচ বহন করব। ওঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ডাক্তারদের সমস্যা নিয়ে প্রশাসন সক্রিয়। তবে কোনওভাবে যেন তাঁরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ফাঁদে না দেন। রাতে এক বৈদ্যুতিন মাধ্যমে সাক্ষাৎকারে সুর আরও অনেকটাই নামিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়ে’ বলে উল্লেখ করেন মমতা। বলেন, আমার-আপনার বাড়ির ছেলেমেয়েরাও ওখানে আছে। কিন্তু, ওদের আবেগের ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে অনেকে। পিজিতে তাঁকে গালি দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ছোটরা আমাকে যা পার বলো, কিন্তু, রাজ্যবাসীকে চিকিৎসা দাও। তাঁদের এও স্মরণ করান, ডাক্তার ধর্মঘটের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রায় আছে। বেশ কিছু রাজ্য এসব ক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপের সময় আরও এক বছর বাড়িয়ে শাস্তি দিয়েছে। আমাকে এইসবে বাধ্য কোরো না।
এদিন এনআরএস চত্বরে এবিভিপি এবং বিজেপির একাধিক শাখা সংগঠনের লোকজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলপন্থীদের। সন্ধ্যায় বাইরের কিছু লোকজন বাঁশ, লাঠি নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সমাধানসূত্র খুঁজতে চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চের প্রতিনিধিদল রাজভবনে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করে হস্তক্ষেপ দাবি করে। এইসব চাপানউতোরে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্কট আরও বেড়েছে। পিজি ছাড়া কলকাতার কোনও মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সিতেই কাজ হয়নি। চরম ভোগান্তি হয়েছে জেলায় জেলায়। স্ট্রোক, সাপে কাটা, হার্ট অ্যাটাকের রোগীদের ফিরতে হয়েছে। অনেকেই জানান, ডাক্তারদের উপর হামলায় যুক্তদের কড়া শাস্তি চান তাঁরাও। কিন্তু মানুষের জীবনমৃত্যু নিয়ে ছিনিমিনি চলতে পারে না। এদিন পিজি, এনআরএস সহ বহু হাসপাতালে রোগীর পরিজনরা বিক্ষোভ দেখান, অবরোধ করেন।
সকালে অভিজিৎ মল্লিক নামে মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা এক ব্যক্তির তিনদিনের দুধের শিশু কলকাতার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা না মারা যায় বলে অভিযোগ। ডাক্তারদের ধর্মঘটে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালেও বিনা চিকিৎসায় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। চাপড়ার এক সাপে কাটা রোগীরও মৃত্যু হয়েছে। এনআরএস অচল থাকায় ভোজালির কোপে জখম ছাত্রকে ভর্তির ক’দিন পর জিয়াগঞ্জে ফিরিয়ে আনে পরিবার। বহরমপুরে সরকারি হাসপাতালে অচলাবস্থা থাকায় নার্সিংহোমগুলিতে চুটিয়ে রোগী দেখেন ডাক্তাররা। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আউটডোর ও ইমার্জেন্সি দুই বন্ধ থাকায় মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।