বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের পর বেড়ে চলা জুনিয়র ডাক্তারদের ক্ষোভকে সমর্থন করে বুধবার রাত ১১ টা ২৮ মিনিটে ফেসবুকে পোস্টটি করেছেন সাবা হাকিম। প্রথমেই তিনি লিখেছেন— এই পোস্ট তাঁদের জন্য, যাঁরা জানেন না যে সরকারি হাসপাতালগুলিতে এবং বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তাররা বহির্বিভাগ বয়কট করলেও জরুরি বিভাগে কাজ করছেন। অন্যান্য পেশার মতো আমরা কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েই খালাস হতে পারি না, কারণ দিনের শেষে আমাদের মানবিকতা রয়েছে। যদি একটা বাস বা ট্যাক্সি ধর্মঘট হতো, তাহলে পরিস্থিতি যত খারাপই হোক, একজন ট্যাক্সিচালক বা বাসচালকও আপনাকে পরিষেবা দিতেন না।
একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত সাবা বুধবার রাতে কড়া বার্তা দিয়ে পোস্টে আরও লেখেন, যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, অন্য রোগীদের কী দোষ, তাঁরা দয়া করে সরকারকে প্রশ্ন করুন, সরকারি হাসপাতালে মোয়াতেন থাকা পুলিস অফিসাররা ডাক্তারদের রক্ষা করার জন্য কিছুই করেন না কেন? দয়া করে তাঁদের প্রশ্ন করুন যে, যখন দুটো ট্রাকে বোঝাই হয়ে গুন্ডারা এল, তখন অবিলম্বে আরও বাহিনী পাঠানো হল না কেন? মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য জানিয়েছেন, সাবা একজন ডাক্তার। তাই সে বন্ধুদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রশাসনের আরও অস্বস্তি বেড়েছে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফেসবুকে সাবার দ্বিতীয় পোস্টে। মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএমে গিয়ে রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, কাজে না যোগ দিলে হবু চিকিৎসকদের হস্টেল ছাড়তে হবে। সেটিরই পাল্টা পোস্ট করে সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলির পড়ুয়াদের উদ্দেশে সাবা লিখেছেন, কেউ যদি আমাদের এখানে (যাদবপুরস্থিত একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ) আসতে চাও, তাহলে তাঁদের স্বাগত। এখানে অনেক ঘর রয়েছে। আমরা সবরকম ব্যবস্থা করে দেব। সন্ধ্যার পরে এই পোস্টটি ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই শাসকদলের অন্দরেও শোরগোল পড়েছে।
এখানেই কিন্তু শেষ হচ্ছে না তৃণমূলের অস্বস্তি। তৃণমূল সাংসদ তথা আইএমএ’র সর্বভারতীয় সভাপতি শান্তনু সেনের স্ত্রী কাকলি সেনও ফেসবুকে বিস্ফোরক বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, আমরা অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও কঠিন শাস্তি দাবি করছি। চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের আমরা অনুরোধ করছি, এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে এক হতে। কোনও সংবাদমাধ্যম, সরকার অথবা সেলিব্রিটি ডাক্তারদের গণপ্রহারের বিরুদ্ধে দাঁড়ান না। ডাক্তাররা সংখ্যায় কম, কেউ আপনাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন না। যদি এখনও আপনারা ঐক্যবদ্ধ না হন, তা হলে একে একে আপনারা সকলে গণপ্রহারের শিকার হবেন। প্রয়োজন হলে সব হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে— এমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
এই দু’জনের পাশাপাশি, খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সদস্যই ডাক্তারদের সমর্থনে মিছিলে পা মিলিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তথা পেশায় চিকিৎসক আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে মিছিলে শামিল হন।