কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যা ছ’টায় এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ায় মহম্মদ সইদ (৮৫) নামে ট্যাংরার বাসিন্দা এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন বাড়ির লোকজন। মৃতের ভাইপো আফরোজ আলমের অভিযোগ, কাকা সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। সোমবার আচমকাই তাঁদের জানানো হয়, রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, দেহ আটকে রেখে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
এদিকে, বৃদ্ধের মৃত্যুর পর তখনকার মতো বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলেও তারা পরে আসার হুমকি দিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও পুলিসে খবর দেয়। রাত ১১টা নাগাদ কয়েকটি লরি ও মোটরবাইক করে রোগীর বাড়ির প্রায় দু’শো লোকজন হাসপাতালে ঢুকে পড়ে। পরিবহ মুখোপাধ্যায় নামে ডোমজুড়ের বাসিন্দা এক ইন্টার্নের মাথায় পাথর তুলে মারা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন পরিবহ। মারধর করা হয় আরও কয়েকজন ইন্টার্নকে। তারপর পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। রোগীর বাড়ির লোকজনকেও রাস্তায় ফেলে ব্যাপক মারধর শুরু হয়। হাসপাতালের গেট বন্ধ করে রাত সওয়া ১২টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করে দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। রাত যত গড়ায়, অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজেও সেই খবর ছড়ায়।
গভীর রাতে পরিবহকে পার্ক সার্কাস লাগোয়া একটি স্নায়ুরোগ চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। তাঁর মাথার খুলির হাড় ভেঙে কিছুটা ভিতরে ঢুকে যায়। সঙ্গে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর অপারেশন হয়েছে। বর্তমানে অবস্থা স্থিতিশীল। এদিকে, পরিবহের ছবি সহ ঘটনাটি নিমেষে ভাইরাল হয় নেট ও হোয়াটসঅ্যাপে। ক্ষোভ এতটাই বাড়ে, স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডাঃ প্রদীপ মিত্র, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শ্রম প্রতিমন্ত্রী ডাঃ নির্মল মাজি, পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মা এনআরএসেও চিঁড়ে গলাতে পারেননি। মুখ্যমন্ত্রীকে আসতে হবে—এই দাবিতে অনড় থাকেন ডাক্তাররা। এদিকে, ডাক্তারদের ধর্মঘটের জন্য রাজ্যজুড়ে ভোগান্তি চরমে ওঠে হাজার হাজার রোগী এবং তাঁদের বাড়ির লোকজনের। পিজিতে চিকিৎসা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ রোগীর বাড়ির লোকজন হরিশ মুখার্জি রোডে নেমে অবরোধ শুরু করেন। পুলিস জানিয়েছে, এনআরএস-কাণ্ডে তিনটি মামলা রুজু হয়েছে। সুপারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে, রোগীর বাড়ির লোকজন আরও দু’টি মামলা করেছেন ডাক্তারদের বিরুদ্ধে। এদিকে, এই ঘটনায় ডাক্তারদের নিরাপত্তার দাবিতে আজ, বুধবার রাজ্যজুড়ে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আউটডোর বন্ধের ডাক দিয়েছে সাতটি বিরোধী চিকিৎসক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। সকাল ন’টা থেকে রাত ন’টা ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।