পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
লোকসভা নির্বাচনে ‘মিশন ২০১৯’ আশাতীত সাফল্য দিয়েছে বাংলায়। সেই সাফল্যে বলীয়ান হয়েই এবার ‘মিশন ২০২১’। এই ১৮০ আসনের টার্গেট কীভাবে পূরণ হবে, সে জন্য দলের রণকৌশলের প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি করতে নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণের পরেই পশ্চিমবঙ্গে যাবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। এমনটাই জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপির শীর্ষ সূত্রে। এবারের লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গ থেকে যে ১৮ জন সংসদ সদস্য বিজেপি পেয়েছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সেই এমপিদের উপরই বিশেষ দায়িত্ব দিতে চলেছেন অমিত শাহ। এক্ষেত্রে দলের একেবারে নিচুতলার সংগঠনকে আরও কতটা শক্তিশালী করা প্রয়োজন, প্রাথমিক রণকৌশল তৈরি করতে সেই দিকটি সর্বাগ্রে খতিয়ে দেখবেন বিজেপি সভাপতি।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মোট ৪২টি আসনের মধ্যে ন্যূনতম ২৩টি কেন্দ্রে জয়লাভের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। ফল বলছে, লক্ষ্যমাত্রার থেকে মাত্র পাঁচটি আসন কম রয়েছে গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই প্রাপ্ত আসন সংখ্যা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক মোদি-অমিত শাহের কাছে। তাই পশ্চিমবঙ্গের আগামী বিধানসভা নির্বাচনে অমিত শাহের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ঝাঁপাতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। দলের অন্দরের ব্যাখ্যা, লক্ষ্যমাত্রাকে পাখির চোখ করে নির্বাচনী ময়দানে নামলে নির্দিষ্ট টার্গেটের থেকে কিছু আসন কমবেশি হতেই পারে। যেমন লোকসভা নির্বাচনে হয়েছে। কিন্তু তাতে আবারও স্পষ্ট হয়ে যাবে, বিজেপির সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি কতটা হয়েছে। এ ব্যাপারে আজ বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় স্পষ্টই বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে ১৮০টি আসন জয়ের লক্ষ্যে আমাদের আলোচনা শুরু হয়েছে।’ পাশাপাশি বিজেপির অন্যতম কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সহনেতা সুরেশ পূজারি বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি যে ফল করেছে, তাতে স্পষ্ট বিধানসভা ভোটে আরও ভালো ফল করবে দল। এক্ষেত্রে ১৫০ প্লাস টার্গেটে পৌঁছতে বিজেপির কোনও অসুবিধা হবে না। তবে এর যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু হবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয়বার শপথগ্রহণের পর। তারপরেই নির্দিষ্ট করে বাংলা নিয়ে আলোচনায় বসবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মোদিজির শপথগ্রহণের পরই ঠিক হবে, অমিত শাহ কবে ফের বাংলায় যাবেন।’ সূত্রের খবর, নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণের পর বাংলায় দলের বিজয়োৎসবে হাজির থাকতে পারেন অমিত শাহ। সেইসময় বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে এই ইস্যুতে একপ্রস্থ বৈঠক সারতে পারেন তিনি।
বাংলা থেকে জয়ী বিজেপির ১৮ জন সাংসদকে নিয়ে গতকালই দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেনন, রামলাল প্রমুখ। দলীয় সূত্রের খবর, সেখানেই প্রাথমিকভাবে রাজ্যের আগামী বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে অমিত শাহ কী চাইছেন, তা জানানো হয় এমপিদের। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য বলেন, ‘২০২১ সালে বাংলায় ১৫০টির বেশি আসনে জয়লাভের যে কথা অমিত শাহজি বলছেন, তা পূরণে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। কারণ বাংলায় দলের সংগঠন এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। তবে এক্ষেত্রে দলীয় এমপিদেরই প্রধান ভূমিকা নেওয়ার কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।’ এমনিতেই ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার নিরিখে ১২৯টি আসন লাভ করেছে বিজেপি। বস্তুত এই মুহূর্তে বাংলায় যা মোদি তথা বিজেপি হাওয়া রয়েছে, তাতে এই সংখ্যাটিকে দেড়শোয় নিয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। কিন্তু তার জন্য সংগঠনে জোর দিতে হবে বিজেপিকে। সেটাই এখন লক্ষ্য অমিত শাহের।