কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
কংগ্রেসের মতে, বাংলায় প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে বামেরা রাজত্ব করলেও বিরোধী দল ভাঙিয়ে শাসক শিবিরের লোক টেনে আনার চল ছিল না। ২০১১ সালে পালাবদলের পর শাসকদল তৃণমূলের আগ্রাসনে পড়তে শুরু করে বিরোধী দলগুলি। তৃণমূল জমানায় পুরসভা বা পঞ্চায়েত ভোটে যেখানে একটিও জোড়াফুল ফোটেনি, সেইসব বোর্ডও রাতারাতি কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। কংগ্রেসের জেতা মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে স্রেফ দল ভাঙিয়েই ক্ষমতায় আসে শাসকদল। ২০১৬ সালে তৃণমূল রেকর্ড সংখ্যক আসনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বছরেই বামেরা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছিল। সেবার রাজ্য বিধানসভায় ৪৪টি আসন জিতে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পায় কংগ্রেস। মে মাসে দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের পর ২১ জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চে এক বাম ও এক কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল বিধায়ককে দলে টেনেছিল শাসকদল। তারপর থেকেই প্রধানত কংগ্রেসের বিধায়কদের টার্গেট করতে থাকে তৃণমূল। যদিও দল ভাঙানোর কথা মানেনি তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, উন্নয়নে শামিল হতেই নাকি বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা দলে দলে তৃণমূলে নাম লেখাচ্ছেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের মতে, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে দুর্বল করেছেন মমতা। তার খেসারত তাঁকে দিতে হবেই। তিনি বলেন, মুখে হিন্দুত্বের বিরোধিতা করলেও তৃণমূলের আচরণ ঠিক তার উল্টো। কেন? কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতার মতে, গেরুয়া শিবির যখন রামনবমীর নামে ধর্মীয় মেরুকরণের উদ্যোগ নেয়, তার মোকাবিলা করতে তৃণমূল দলের কোর কমিটির বৈঠক থেকে একই কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেয় কর্মীদের। একদিকে, বিরোধী শিবিরের ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে দুর্বল করা, অন্যদিকে ধর্মীয় বিভাজনের ফাঁদে পা দিয়ে রাজ্যে বিজেপির জমি তৈরি করে দিয়েছে তৃণমূল। প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা অমিতাভ চক্রবর্তীর দাবি, মুর্শিদাবাদে অধীর চৌধুরীকে হারাতে রাজ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করেছিল তৃণমূল। মালদহে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে একটি আসনও জিততে পারেনি তৃণমূল। অথচ গায়ের জোরে প্রশাসন ও পুলিসের মাধ্যমে সেই জেলার নির্বাচিত জেলা পরিষদ দখল করেছিল শাসকদল। পরে পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীশূন্য করার ডাক দিয়ে প্রহসনে পরিণত করেছিল ত্রিস্তরীয় নির্বাচনকে। বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীর দাবি, জেলায় কংগ্রেসকে ভাঙাতে পুলিসকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের কর্মীদের মিথ্যা মাদকের মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করাকে অভ্যাসে পরিণত করেছিল শাসকদল। এমনকী পূর্ব মেদিনীপুরের এক প্রাক্তন বিধায়ককে খুনের মামলায় ফাঁসিয়ে দলে টেনেছিল তৃণমূল। তিনি বলেন, বিজেপি বিরোধীদের ধ্বংস করতে গিয়ে সরাসরি বিজেপির সঙ্গে দ্বিমুখী লড়াইয়ের জমি তৃণমূল নিজেই তৈরি করেছিল। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, বাম আমলে বহুদলীয় ব্যবস্থায় বিরোধী ভোট বিভাজনের সুবিধা পেয়েছিল তৎকালীন শাসকদল। সেই বহুদলীয় ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে মেরুকরণ আরও প্রকট হয়েছে। আর তাতেই হ্রাস পেয়েছে তৃণমূলের আসন।