বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গণিতে গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩০,৬১৬ জন। এবার সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২২,৬৫৩। পদার্থবিজ্ঞানে ২৪,৬৮৫ থেকে সংখ্যাটা নেমেছে ১১,৩০৯-এ। সবচেয়ে বেশি ফারাক গড়ে দিয়েছে জীবনবিজ্ঞান। তাতে ‘এএ’ প্রাপকের সংখ্যা ছিল ৪০,২৯৭ জন। এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২১,৬৮৯। গতবার খারাপ ফল হয়েছিল ইংরেজি সহ ভাষাপত্র এবং কলাবিভাগের বাকি দু’টি বিষয়ে। এবার ছবিটা উল্টো। দ্বিতীয় ভাষায় (সিংহভাগ ক্ষেত্রেই তা ইংরেজি) ৫,৩০৫ থেকে ‘এএ’ গ্রেড পাওয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২,৯০১। প্রথম ভাষায় (অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা বাংলা) সংখ্যাটা ১০,২৪৩ থেকে বেড়ে হয়েছে ১২,৮৪৩। ভূগোলে এই সংখ্যা ২৬,২০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৬,৫৭৮। শুধু ইতিহাসের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা উল্টো হয়েছে। ২০১৮ সালে তার আগেরবারের চেয়ে অনেকটাই কমে ইতিহাসে ‘এএ’ প্রাপকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৫,১৩২। কিন্তু ইতিহাসের ফল এবার তার চেয়েও খারাপ হয়েছে। এ বছর ‘এএ’ প্রাপকের সংখ্যা মাত্র ১৩,৩৭৮।
শিক্ষামহলের মতে, এ রাজ্যে বিশেষ করে বাংলা মাধ্যমে বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষকের অপ্রতুলতা এর একটা কারণ। একের পর এক এসএসসি’র পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, শূন্যপদের তুলনায় বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে সফল প্রার্থীর সংখ্যা অনেকটাই কম। ফলে সব শূন্যপদ পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি এবং গার্ডেনরিচ নুটবিহারী দাস গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্য সার্বিক শিক্ষা এবং বিজ্ঞান চর্চার অবনমনকেই এর জন্য দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছেন, তাঁদের স্কুলে দীর্ঘ আট বছর গণিতের কোনও শিক্ষিকা ছিলেন না। ভৌতবিজ্ঞানে দু’জন শিক্ষিকা। আর জীবনবিজ্ঞানে শিক্ষিকার সংখ্যা মাত্র এক। অতি সম্প্রতি একজন গণিতের শিক্ষিকা পাওয়া গিয়েছে। অথচ ছাত্রীর সংখ্যা ১২০০। এই তিনজনই নিচু ক্লাস থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বিজ্ঞানের সমস্ত বিষয়, পরিবেশ বিদ্যা প্রভৃতি ক্লাস সামাল দেন। তার উপর শিক্ষিকাদের সিসিএল, মাতৃত্বকালীন ছুটির বিষয়টি তো রয়েছেই। অনেক সময়ই এমন হয়, স্কুলে কোনও বিজ্ঞানের শিক্ষিকা নেই। সঙ্ঘমিত্রাদেবীর বক্তব্য, তাঁর স্কুলে প্রান্তিক পরিবারের ছাত্রীরা পড়াশোনা করে, যারা বেশি টাকা দিয়ে প্রাইভেট টিউশন পড়তে পারে না। শহরের স্কুলে এই সমস্যা হলে তো গ্রামগঞ্জে তা বেশি হবেই। এর সার্বিক প্রভাব পড়েছে বিজ্ঞানের বিষয়গুলির ফলাফলে।