কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশ দাস শনিবার জানিয়েছেন, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং নদীয়া জেলায় দিনদুয়েক এরকম অস্বস্তিকর গরম চলবে। ঝড়-বৃষ্টির আশা বিশেষ নেই। আটটি জেলার জন্য তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। দু’টি ছাড়া সবগুলি পশ্চিমাঞ্চলের। তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম ও মুর্শিদাবাদে। তাপপ্রবাহ হওয়ার জন্য সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি অতিক্রম করার পাশাপাশি তা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি বেশি হতে হবে। পশ্চিমাঞ্চল, মুর্শিদাবাদ ও পূর্ব বর্ধমান জেলায় এখন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি বা তার আশপাশে রয়েছে। কলকাতায় এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি ছিল। সর্বনিম্ন আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৬৩ শতাংশ। আজ, রবিবার কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রির আশপাশে থাকবে বলে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে।
আবহাওয়া অধিকর্তা জানিয়েছেন, মে মাসের এই সময়ে বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে। তার সঙ্গে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে গরমের কষ্ট বেশি অনুভূত হয়। দখিনা বাতাস বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প টেনে আনছে। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় মে মাসের এই সময়ে ভোট পড়েছিল। তখনও কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশপাশে ছিল। ২০১৪ সালের ১২ মে কলকাতায় ভোটের দিন তো তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল শহরে। ওই দিন কলকাতায় তাপমাত্রা (৪১.৪ ডিগ্রি) স্বাভাবিকের থেকে ৬ ডিগ্রি বেশি ছিল। কলকাতায় মে মাসে সবথেকে বেশি গরম পড়েছিল ১৯৪৫ সালের ২৮ তারিখ। ওইদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩.৭ ডিগ্রি। কলকাতার তুলনায় এদিন দমদমে তাপমাত্রা অনেকটাই বেশি ছিল। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৩ ডিগ্রি। আসানসোল, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় তাপমাত্রা এদিন ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঝাড়খণ্ড, বিহারের দিক থেকে শুকনো, গরম হাওয়া ওই সব এলাকায় ঢোকার জন্য গরম বাড়ছে। আকাশে মেঘ না থাকায় ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগর থেকে দখিনা বাতাসের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ঢুকলেও বড় ধরনের ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। এর জন্য প্রয়োজন কোনও নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হওয়া। এদিন পূর্ব বিহারের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত ছিল। সেখান থেকে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা বের হয়ে ঝাড়খণ্ডের উপর দিয়ে দক্ষিণ ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। কিন্তু এর থেকে বিশেষ আশার কিছু নেই বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। গণেশবাবু জানিয়েছেন, ওই ঘূর্ণাবর্তটি সরে যাবে। জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে কোথাও কোথাও বড়জোর বিক্ষিপ্তভাবে হালকা মাত্রার ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে।
তবে এর মধ্যে একটাই আশার দিক আছে। আজ, শনিবার দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দক্ষিণ আন্দামান সাগর, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ঢুকে পড়েছে। আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে মৌসুমি বায়ু উত্তর আন্দামান সাগর, আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে ঢুকে পড়বে। কয়েকদিনের মধ্যে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে পুরোপুরি বর্ষার মরশুম শুরু হয়ে যাবে। তবে এবার কেরল হয়ে দেশের মূল ভূখণ্ডে বর্ষার প্রবেশ কিছুটা বিলম্বিত হয়ে ৬ জুন হতে পারে বলে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে।