রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল ৯.৮৮ কোটি টাকা। এবারের লোকসভা নির্বাচনে তার থেকে সাত গুণ বেশি টাকা উদ্ধার হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল ৭.৮০ কোটি টাকা। এবার সমস্ত রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এই সংস্কৃতি ছিল না। এত টাকা উদ্ধার হওয়ায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন। চিন্তিত নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নির্দেশে সপ্তম দফার আগে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক হারে নাকা তল্লাশি শুরু হয়েছে। বিমানবন্দর ও রেলস্টেশনে জোরদার তল্লাশি চালাতে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তার সুফলও পেয়েছে পুলিস। আসানসোলে এক কোটি টাকার বেশি উদ্ধার হয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। ধৃতদের মধ্যে একজনকে টিভি চ্যানেলে বলতে শোনা গিয়েছে, এটা পার্টির টাকা। বৃহস্পতিবার জয়নগর বকুলতলা থেকে বিজেপির এক নেত্রীর কাছ থেকে ২৪ লক্ষ টাকার বেশি উদ্ধার হয়েছে। যা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় প্রতিটি সভাতেই অভিযোগ করেছেন, বিজেপির পক্ষ থেকে টাকা ছড়ানো হচ্ছে। বহু টাকা আসছে রাজ্যে। ওই সব গ্রেপ্তারির মধ্য দিয়ে সেই অভিযোগের সারবত্তাও টের পাওয়া গিয়েছে। এবার কালো টাকা উদ্ধারে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। তবে যেসব ব্যক্তি বা সংস্থার কাছ থেকে এক কোটি টাকার বেশি উদ্ধার হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বিস্তারিত তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই তদন্ত করবে আয়কর দপ্তর। আয়ের উৎস কী এবং টাকা কী কাজে লাগানো হচ্ছে, সেব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠাতে হবে। কমিশন পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলার রিপোর্ট যেমন নতুন করে খতিয়ে দেখছে, তেমনই উদ্ধার হওয়া টাকার উৎস খতিয়ে দেখছে তারা।
ভোট ঘোষণার প্রথম ১০ দিনেই প্রায় ছ’কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছিল। তাতেই নজর পড়ে কমিশনের। এরপরেই টাকা উদ্ধারের জন্য যে সমস্ত এজেন্সি কাজ করে, তাদের নিয়ে বৈঠক করেন কমিশনের কর্তারা। বিমানবন্দর ও রেল কর্তৃপক্ষকেও যাত্রীদের উপর নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, একজন প্রার্থী ৫০ হাজার টাকা এবং একজন স্টার ক্যাম্পেনার এক লক্ষ টাকা নিয়ে ঘুরতে পারেন। তাই বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীর গাড়িতে তল্লাশি করে পুলিস। রাজ্য সড়ক, জাতীয় সড়কেও জোর তল্লাশি শুরু হয়। ভোট শেষ হওয়ার মুখে কালো টাকা উদ্ধারে বিশেষ নজরদারি চলায় অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে এ বছর। যা নিয়ে চিন্তিত কমিশন ও রাজ্য প্রশাসন।
তাই সংবিধানের ৩২৪ ধারা মেনে বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় প্রচার শেষ করতেই শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে নাকা তল্লাশি। তাতে ছাড় পাননি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিও। শুক্রবারও রাজ্যজুড়ে জোর তল্লাশি চলে। আজ, শনিবারও তল্লাশি চলবে বলে কমিশনের তরফে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। তল্লাশিতে থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও। এবারের ভোটে মদ উদ্ধার হয়েছে ১৬ লক্ষ ২৬ হাজার লিটার। যা রেকর্ড। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে সপ্তম দফার ভোটের ন’টি লোকসভা কেন্দ্রে সমস্ত মদের দোকান, বার, পানশালা বন্ধ করা হয়েছে। খুলবে রবিবার সন্ধ্যা ছ’টার পরে। সপ্তম দফার ভোট কমিশনের কাছে চ্যালেঞ্জ। তার জন্য জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে। দিল্লি থেকে প্রতি মুহূর্তে এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছে কমিশন। বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে বৈঠক করে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট করার নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক ও বিশেক পুলিস পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে।