গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মঙ্গলবার অমিত শাহর রোড শো ঘিরে উত্তর কলকাতা রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল। বিদ্যাসাগর কলেজে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দেওয়া হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপি এবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় জরুরি ভিডিও কনফারেন্স করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। সেখানে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের কাছে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান এবং রাজ্যের হিংসা নিয়ে কড়া ভাষায় উষ্মাপ্রকাশ করেন। সেই ভিডিও কনফারেন্সে বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক ও বিশেষ পুলিস পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেও ছিলেন। তাঁদের কাছ থেকেও আলাদা রিপোর্ট চাওয়া হয়। দুই পর্যবেক্ষকের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জরুরি সাংবাদিক বৈঠক করে নজিরবিহীন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয় কমিশন।
কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পশ্চিমবঙ্গে ভোটকে ঘিরে হাঙ্গামা ও হিংসার ঘটনা ঘটছে বলে কমিশনের নজরে এসেছে। পর্যবেক্ষকরা যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে বলা হয়েছে, জেলায় জেলায় প্রার্থীদের প্রচারে অসহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসন। সবার ক্ষেত্রে সমান প্রচারের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। সবার প্রচারের ক্ষেত্রে অবাধ পরিবেশ ছিল না। জেলা প্রশাসন ও পুলিস সহযোগিতা করছে না। উপর থেকে দেখে সবকিছু ঠিক মনে হলেও মানুষের মনে যে আতঙ্ক রয়েছে, তা তাঁদের সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যাচ্ছে। তৃণমূলের প্রবীণ নেতারা বলছেন, ভোটের পরে যখন কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না, তখন আমরাই থাকব। এই ধরনের কথা আধিকারিক ও ভোটারদের প্রতি ‘চিলিং মেসেজ’ বলে মনে করছে কমিশন। ভোটের প্রচারে যে হিংসার ঘটনা ঘটছে, তাতে বিদ্বেষের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। ভোটারদের নিরাপত্তাই হল নির্বাচন কমিশনের প্রধান লক্ষ্য। সেকারণেই পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
নির্দেশে বলা হয়েছে, ভারতীয় সংবিধানের ৩২৪ ধারায় অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণের দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে রাষ্ট্রপতি, উপ রাষ্ট্রপতি ও নির্বাচন কমিশনের উপর। নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় রয়েছে। তা কমিশনের নির্দেশিকায় বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কোথাও ভোট প্রক্রিয়ায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বা এক্তিয়ার কমিশনের রয়েছে বলে ফুলবেঞ্চের স্বাক্ষরিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করার ক্ষমতা রয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের। সে কারণেই সপ্তম দফার ভোটে প্রচারের সময় কমিয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাত ১০টা পর্যন্ত করা হল। উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রচারের সময়সীমা ছিল। নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর কোনওভাবেই ভোটের প্রচার চালানো যাবে না। এমনকী কোনও আমোদপ্রমোদ বা গানবাজনার অনুষ্ঠান করার মাধ্যমে ভোটের দিকে তাকিয়ে লোকজন জড়ো করাও যাবে না। এই সব লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে হোটেল, দোকান সহ কোনও জায়গায় মদ বিক্রির উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।