নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অমিত শাহর রোড শো ঘিরে গেরুয়া শিবিরের তাণ্ডব এবং বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল সুপ্রিমোর হুঁশিয়ারি, আগে বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের এই তাণ্ডব এবং বরেণ্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর এখন বলছি, এবার বদলা চাই, গণতান্ত্রিকভাবেই বদলা চাই। এতদিন মাথা গরম করিনি, কিন্তু আজ করছি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেহালা চৌরাস্তায় দলের নির্বাচনী জনসভার মঞ্চ থেকে ক্ষুব্ধ মমতার প্রতিক্রিয়া—এতদিন চুপ করে বসেছিলাম। এবার বুঝে নেব। ২৩ তারিখের পর সব বুঝে নেব। গেরুয়া শিবিরের প্রতি তাঁর হুঙ্কার, এটা কলকাতার লজ্জা। নকশাল আমলেও এসব হয়নি। বিজেপি, মনে রেখ, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে এর জবাব দেব। সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আওড়ে মমতা জানিয়েছেন তাঁর ক্ষোভের কথা। বলেছেন, ‘আদিম হিংস্র মানবিকতার যদি আমি কেউ হই/স্বজন হারানো শ্মশানে তোদের চিতা আমি তুলবই।’ বেহালার ওই জনসভার পরই ঘটনাস্থল বিধান সরণীতে বিদ্যাসাগর কলেজ পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানান, এই ঘটনা নিয়ে কলকাতা পুলিসের নাম করে একটি ‘ফেক’ বিবৃতি বাজারে ছড়ানো হয়েছে। যাতে গোটা ঘটনার জন্য তৃণমূলকেই দায়ী করা হয়েছে। পুলিস কমিশনার ডঃ রাজেশ কুমার জানান, এরকম কোনও বিবৃতি কলকাতা পুলিসের তরফে দেওয়া হয়নি।
বেহালায় সভা চলাকালীন বিদ্যাসাগর কলেজে হামলা এবং মূর্তি ভাঙার ঘটনার খবর পান মমতা। মঞ্চেই উগরে দেন তাঁর ক্ষোভ। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, অমিত শাহবাবু এখানে রোড শো করতে এসেছেন। রাজস্থান, বিহার, ঝাড়খণ্ড আর উত্তরপ্রদেশ থেকে লোক এনে। সাধারণ লোক নয়, বিজেপি’র গুণ্ডারা এসেছিল। মিছিল শেষে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙল, আগুন জ্বালাল। গলার সুর চড়িয়ে মমতার হুঙ্কার, বাংলার হেরিটেজকে অপমান করেছে ওরা, ভেঙেছে মণীষীর মূর্তি। এবার আর চুপ করে থাকব না। এরপরই বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে গুণ্ডা বলে সম্বোধন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অমিত গুণ্ডা, হ্যাঁ, গুণ্ডাই বলব। আজ আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না। এত বড় সাহস! এর শেষ দেখে ছাড়ব। মমতা ঘোষণা করেন, আগামী ১৬ মে জোকা থেকে তারাতলা পর্যন্ত আরও একটি প্রতিবাদ মিছিল হবে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের বুকে থাকবে বাংলার নানা মণীষীর ছবি সংবলিত ব্যাজ।