বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
আন্তর্জাতিক বা দেশীয় সংস্থাগুলির রেটিং মূলত বাণিজ্যিকরণের দিকেই ইঙ্গিত করছে। স্কিল ডেভেলপমেন্ট, অন্ত্রেপ্রেনরশিপ ডেভেলপমেন্ট, বাণিজ্যিক কাজে লাগতে পারে এমন গবেষণালব্ধ পণ্য ও পরিষেবা স্টার্ট আপ সংস্থা তৈরির উপর রেটিং সংস্থাগুলি জোর দিচ্ছে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মৌলিক গবেষণা বা জ্ঞান বিতরণের চরিত্র, সেটা থেকে সরে আসতে হচ্ছে। যে বিশ্ববিদ্যালয় যত বেশি বাণিজ্যমুখী, তারা রেটিংয়ে বা র্যা ঙ্কিংয়ে তত বেশি এগিয়ে রয়েছে। উৎকর্ষ বৃদ্ধির সঙ্গে সমানুপাতিক সম্পর্ক হিসেবে দেখানো হচ্ছে বেসরকারিকরণ এবং বাণিজ্যিককরণকে। আনা হয়েছে গ্রেডেড অটোনমির মতো বিষয়। যেটা আপাতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার রক্ষার একটি প্রক্রিয়া মনে হলেও আদতে সেটা একটি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার কৌশল। এর মাধ্যমে একটি বিশ্ববিদ্যালয় বাণিজ্যের স্বাধীনতা পেয়ে যাবে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অনুদান প্রদানকারী সংস্থা ইউজিসি তুলে দিয়ে হায়ার এডুকেশন কমিশন অব ইন্ডিয়া চালু করা হচ্ছে। যার মূল নীতি হল, বিশ্ববিদ্যালয়কে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার দিকে জোর দেওয়া। কেন্দ্রীয় সরকার আসলে ভারতকে শিক্ষার লোভনীয় বাজার হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চাইছে। তাই বিভিন্ন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠান এদেশে আসছে একেবারেই বাণিজ্যের উদ্দেশ্য নিয়ে। এদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যে সমস্ত মউ স্বাক্ষরিত হচ্ছে, সেগুলির অধিকাংশ বিষয়বস্তুই বাণিজ্যিক। আগে এ ধরনের মউ হতো গবেষণা পরিকাঠামো বিনিময়, শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রী বিনিময়ের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এখন বেশিরভাগ চুক্তিই মূলত অর্থনৈতিক।
সব দলই ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, শিক্ষার পরিকাঠামো বৃদ্ধি হবে, আরও বেশি তহবিল, ছাত্রদের বৃত্তি, কম খরচে সবার জন্য উচ্চশিক্ষা, অনগ্রসর অংশের জন্য শিক্ষা, উচ্চমানের এবং উদ্ভাবনীমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। প্রায় সবাই জিডিপি’র ছয় শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু এখন বাস্তব পরিস্থিতি হল, শিক্ষাক্ষেত্রে গড়ে জিডিপির ২.৬ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। আর উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে এই বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র ১ শতাংশের কাছাকাছি।
কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করে গৌতমবাবুর দাবি, মনে রাখতে হবে, এই সরকারই শিক্ষা ক্ষেত্রে একের পর এক জনবিরোধী বিল এনেছে। যা দিয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আসন সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, পিএইচডির আসন সঙ্কোচন করা হয়েছে, সিবিসিএস চালু করেছে, ছাত্রদের ফি, সেল্ফ ফিনান্সিং কোর্সের সংখ্যা প্রভৃতি বাড়িয়েছে। অথচ, ছাত্রসংখ্যার উত্তরোত্তর চাপবৃদ্ধি সামাল দিতে পরিকাঠামো বাড়ানো বা স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ, কোনওটাই করেনি সরকার। মাঝখান দিয়ে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) নিয়ে আসছে, বিদেশি শিক্ষক নিয়োগ করছে এবং বিদেশি ছাত্রদের জন্য আসন সংরক্ষণ করছে। এই কেন্দ্রীয় সরকারকে শিক্ষাক্ষেত্র, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রের পক্ষে সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক বলে মনে করছে অ্যাবুটা। ভোটের মুখে তারা এই ইস্যুগুলি তুলে প্রচারও করছে।