বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
টিভি চ্যানেলে দেওয়া মোদির সাক্ষাৎকারের এই অংশ বুধবার সকাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই সিপিএম নেতৃত্ব নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করে, তাদের করা মোদিভাই-দিদিভাই তত্ত্বকে আরও জোরালোভাবে আগামী চার দফার ভোটের আগে প্রচারে নিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে মানুষের সামনে বেশি করে আনবে। একই সঙ্গে দলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলকে মোদির বক্তব্যের সংশ্লিষ্ট ভিডিও দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী সহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা এদিন থেকেই বিভিন্ন জেলায় প্রচারে গিয়ে এই ইস্যুতে ঝাঁঝালো বক্তব্য রাখতে শুরু করে দেন। দলীয় সূত্রের খবর, আগামী চার দফায় দক্ষিণবঙ্গের যে সব কেন্দ্রে নির্বাচন হবে, সেখানে অধিকাংশ জায়গায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় সংখ্যালঘু ভোটার রয়েছে। দলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এই অংশের মানুষের মধ্যে মোদির এই বক্তব্য বেশি করে তুলে ধরার কৌশল কার্যকর করে তোলার জন্য গ্রামেগঞ্জে সম্ভব হলে ওই ভিডিও প্রচার মঞ্চে ছোট স্ক্রিনে দেখানোর ব্যবস্থা করার জন্যও নিদান দিয়েছে আলিমুদ্দিন।
সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সেলিম এদিন বলেন, ২০১৫ সাল থেকে আমরা বিজেপি-তৃণমূলের গট আপ গেমের বিষয়ে মানুষকে বলে আসছি। দিদি-মোদির মধ্যে যে গোপন আঁতাঁত রয়েছে, তা আমরা অনেক আগেই বুঝেছি। কিন্তু অনেকেই সে কথা বিশ্বাস করতে চায়নি। এখন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেওয়ায় দেশজুড়ে শোরগোল পড়েছে। একই সঙ্গে তিনি যেমন কুর্তা-মিষ্টির সৌজন্যের কথা বলছেন, তেমনই ভোটের প্রচারে এসে ফের চিটফান্ডকাণ্ডে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন। আসলে মোদি এবারের ভোটে গোটা দেশে সাকুল্যে ২০০ আসনও পাবেন না বুঝে গিয়েছেন। কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য ভোটের ফল বেরনোর পর প্রয়োজনীয় আসন জোগাড়ের লক্ষ্যে তিনি এখন তৃণমূলের প্রতি ‘গাজর ও চাবুক’ নীতি নিয়ে চলছেন। যাতে তৃণমূলনেত্রী যাবতীয় কেলেঙ্কারির তদন্ত ধামাচাপা দিতে শেষমেশ তাঁর পায়ে ধরেন এবং সরকার গঠনে বিজেপিকে সমর্থন দেন। মোদির ঝোলা থেকে বেরনো এই বিড়ালকে আমরা অবশ্যই বাংলার মানুষের সামনে নিয়ে যাব। তৃণমূল ও বিজেপি যে একই মুদ্রার দুই পিঠ, সেটা বোঝানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে তুলে ধরব প্রচারে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এদিন বলেন, মোদি-মমতার সখ্যের বিষয়টি মোটেও নতুন নয়। ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার পর মোদি মুখ্যমন্ত্রী হলে তাঁকে ফুলের তোড়া পাঠিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মমতা। আরএসএস-এর সদর দপ্তরে গিয়ে তাদের একসময় দরাজ সার্টিফিকেটও দিয়েছিলেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। আমরা সেই প্রেক্ষাপটে মনে করছি, বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে বর্তমানে স্রেফ মেরুকরণের লক্ষ্য সিদ্ধির উদ্দেশ্যে মেকি লড়াই চলছে। মোদির স্বীকারোক্তিকে সামনে রেখে এবার প্রচারে আমরা সে কথা আরও বেশি করে তুলে ধরব।