নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এনসিইআরটি বা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং যে প্রশ্নের উত্তরগুলিকে সঠিক বলে জানিয়েছে, রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন সেগুলিকেই ভুল বলে চিহ্নিত করেছে। যদিও তারই ভিত্তিতে ২০১২ সালের আরএলএসটি পরীক্ষার ফলাফল নির্ধারিত হয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকার কমিশনকে বলেছেন, হলফনামা দিয়ে তাদের বলতে হবে যে, এনসিইআরটি’র দেওয়া উত্তর ভুল। তার সপক্ষে কমিশনকে দিতে হবে তথ্যও।
ওই পরীক্ষা তথা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন প্রায় ৩৮ বছর বয়সি সুধৃতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি ওই শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসেছিলেন। কিন্তু, সফল পরীক্ষার্থীদের তালিকায় তাঁর ঠাঁই হয়নি। কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তিনি কমিশনের কাছে তথ্য জানার অধিকার অনুযায়ী আবেদন করেন। কিন্তু, কোনও জবাব পাননি। বাধ্য হয়ে কমিশনের অ্যাপিলেট অথরিটির কাছে তিনি একই আবেদন করেন। কোথায় তাঁর ভুল হল, তা তিনি জানতে চান। এবার তাঁকে পাঠানো হয় তাঁর ‘ওয়েব মার্কশিট’, যা আদতে তাঁর উত্তরপত্র। যা খতিয়ে দেখে তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর দেওয়া অন্তত ১০টি উত্তরকে কমিশন ভুল বলে চিহ্নিত করেছে। অথচ, প্রখ্যাত লেখকদের বিভিন্ন বই খতিয়ে দেখে তিনি নিশ্চিত হন, ভুল তাঁর নয়, কমিশনের।
নিজ সিদ্ধান্ত জোরদার করতে সুধৃতি এবার তথ্য জানার অধিকার আইন অনুযায়ী এনসিইআরটি’র দ্বারস্থ হন। ওই ১০টি প্রশ্ন পাঠিয়ে জানতে চান, কোন উত্তরটি সঠিক। তাঁর দেওয়া উত্তর, নাকি কমিশনের। জবাবে ওই জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জানায়, তাঁর দেওয়া ১০টি প্রশ্নেরই উত্তর সঠিক। এই অবস্থায় এনসিইআরটি’র জবাব এবং তাঁর সংগৃহীত প্রশ্নগুলির উত্তর সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য তিনি পাঠান কমিশনে। তাঁর আইনজীবী আশিস চৌধুরী আদালতকে জানান, কমিশন সরাসরি এই বিতর্কের জবাব দেয়নি। তারা পাঠায় মামলাকারীর ‘স্কোর-শিট’। সঙ্গে বলা হয়, ভুল করেছেন মামলাকারীই। যা গ্রহণযোগ্য মনে না করায় তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
কমিশনের তরফে এদিন বলা হয়, বিষয়টি খতিয়ে না দেখে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। কিন্তু, আদালত জানতে চায়, এনসিইআরটি যেখানে উত্তরগুলিকে সঠিক বলছে, সেখানে কেন কমিশন সেগুলিকে ভুল বলে চিহ্নিত করল, তার যৌক্তিকতা পেশ হওয়া দরকার।