বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের পর দেখা যায়, অদ্ভূত এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইতিহাসের শিক্ষক নিয়োগপত্র নিয়ে কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখছেন, সেই স্কুলে আসলে জীবন বিজ্ঞানের শূন্যপদ রয়েছে। আবার কোনও প্রার্থী স্কুলে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন, তাঁর শূন্যপদেই নিয়োগপত্র নিয়ে আগে থেকে সেখানে যোগ দিয়ে বসে রয়েছেন অন্য কোনও প্রার্থী। আবার এমন স্কুলও রয়েছে, যেখানে শূন্যপদ না থাকা সত্ত্বেও প্রার্থী পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে একটা বিচিত্র জটিলতার সৃষ্টি হয়। হাতে পর্ষদের ছাড়া নিয়োগপত্র রয়েছে, এদিকে স্কুলে যোগ দিতে পারছেন না, এমন প্রার্থীরা রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়েন। শিক্ষা দপ্তর এবং এসএসসি বিষয়টি খতিয়ে দেখে হিসেব করে, এরকম প্রার্থীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচশোর কাছাকাছি। এই প্রার্থীরা শূন্যপদ নির্ণয়ের ভুলে দিনের পর দিন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকেন। তাঁরা আগে কাজে যোগ দিলে যে সিনিওরিটি পেতেন, সেটাও হারাতে থাকেন। সার্বিকভাবে তাঁদের চাকরির মেয়াদকালও কমতে থাকে। এ নিয়ে অভিযোগ, সংবাদপত্রে লেখালেখির পর শিক্ষা দপ্তর নড়েচড়ে বসে। শুরু হয়, পিঠ বাঁচানোর পালা। দপ্তর থেকে দাবি করা হয়, শূন্যপদের হিসেব পাঠানো হয় ডিআই অফিস থেকে। সেখানেই গণ্ডগোল হয়েছে। আবার ডিআইরা দাবি করতে থাকেন, তাঁদের কাছে ভুল তথ্য দিয়েছিল স্কুলগুলি। এদিকে স্কুলগুলির দাবি ছিল, তাঁদের তরফে ডিআই অফিসে জমা দেওয়া তথ্যে কোনও খামতি নেই। প্রকৃত দোষীকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও এর ফল ভুগতে হয় এইসব শিক্ষক পদপ্রার্থীদের।
এর পরেই প্রকৃত শূন্যপদের হিসেব কষতে খোঁজ শুরু হয়ে যায়। যথাসময়ে হিসেব করা হয়নি, এমন কিছু শূন্যপদও হাতে আসে দপ্তরের। কোন কোন ক্ষেত্রে ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেগুলিও কিছু কিছু চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। কিন্তু খুবই ধীর গতিতে সেই কাজ এগচ্ছিল। কিন্তু ভোটের চাপেই হোক বা অন্য কোনও কারণে, দু’দিনে এত সংখ্যক শিক্ষককে সঠিক নিয়োগপত্র দেওয়া হল এই প্রথম। উল্লেখ্য, ইসলামপুরের দাড়িভিট স্কুল কাণ্ডে দু’জন ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সেখানেও শূন্যপদ নিয়ে গণ্ডগোল বেঁধেছিল। তার জেরেই ওই গুলিচালনার ঘটনা ঘটে। তখন অভিযোগ উঠেছিল, ডিআই শূন্যপদের চরিত্র পরিবর্তন করেছেন। যা করা যায় না। এই অভিযোগে, কর্তব্যরত ডিআইকে সাসপেন্ডও করেছিল শিক্ষা দপ্তর। শিক্ষামন্ত্রীও জানিয়ে দেন, শূন্যপদের চরিত্র কোনওভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু পরে দেখা যায়, শূন্যপদের চরিত্র পরিবর্তন ছাড়া এতজনকে চাকরি দেওয়া সম্ভবই নয়। বিকাশ ভবনের অন্দরের খবর, সেই পথে হেঁটেই পরিস্থিতি অনেকটা সামাল দিতে পেরেছে শিক্ষা দপ্তর।