নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত বৃহস্পতিবার, দোলের দিন হুগলি নদী থেকে পলি তোলার কাজে নেমেছিল গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের একটি ড্রেজিং বোট। এই বোটে করেই পলি তুলে তা পাড়ে নিয়ে আসা হচ্ছিল। কিন্তু ওই দিনই পলি তোলার মেশিন সহ বোটটি জোয়ারের জলে উল্টে যায়। দু’দিন পর শনিবার সেই বোটকে বিচালি ঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়। বিচালি ঘাট লাগোয়া একটি লঞ্চের সঙ্গে দড়ি দিয়ে আটকে ড্রেজিং মেশিন থাকা বোটটিতে ফের পলি তোলার কাজ শুরু হয় এদিন। কিন্তু জোয়ারের জলের টানে সেই বোটটি দড়ি ছিঁড়ে আবারও উল্টে যায়। সেই সময় বোটে থাকা বাকি কর্মীরা নিজেদের সামলে নিলেও একজন ঠিকাকর্মী নদীতে তলিয়ে যান। কলকাতা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এসে তল্লাশি চালালেও রাত পর্যন্ত ওই নিখোঁজ কর্মীর খোঁজ পায়নি। পুলিস জানিয়েছে, নিখোঁজের নাম মহম্মদ আকবর আলি। তিনি স্থানীয় দেওয়ান বাগান এলাকার বাসিন্দা। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, বোটটি উল্টে যাওয়ায় প্রত্যেকেই নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। মহম্মদ আকবর আলি নামে ওই ব্যক্তিও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু জলের টান থাকায় তাঁকে প্রথমে ভেসে যেতে দেখা যায়, তারপর তলিয়ে যান। তবে তলিয়ে যাওয়ার আগে তিনি হাত তুলে চিৎকার করার চেষ্টা করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
ঠিকাকর্মীদের অভিযোগ, ওই তলিয়ে যাওয়া কর্মীকে উদ্ধারের জন্য কোনও তৎপরতাই দেখায়নি জিআরএসই কর্তৃপক্ষ। তারা যদি সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিত, তাহলে ওই কর্মীকে উদ্ধার করা সম্ভব হতো। তাছাড়া এই কাজে নিরাপত্তার জন্য লাইফ জ্যাকেটের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে কিছুই ছিল না। এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি বিক্ষোভ দেখায়। অফিসের গেটের সামনেই এই বিক্ষোভ চলে। এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলার তথা মেয়র পরিষদ সদস্য শামসুজ্জামান আনসারি বলেন, এই কাজের জন্য সাঁতার জানা দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হয়। কিন্তু ওই কর্মী সাঁতার জানতেন না বলেই আমি জেনেছি।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বোটটি জলের টান সামলাতে পারেনি। দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ায় বিপত্তি আরও বড় আকার নেয়। এদিন কলকাতা পুলিসের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরাও তলিয়ে যাওয়া ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি চালান। কিন্তু জোয়ারের টান বেশি থাকায় সেই তল্লাশির কাজ বিঘ্নিত হয়।