কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
একদিকে, এই পরিসংখ্যান যেমন রাজ্যের রক্ত পরিষেবার জন্য উৎসাহোদ্দীপক, অন্যদিকে যত দিন গড়িয়েছে চাহিদার তুলনায় রক্ত সংগ্রহ কমছে এশিয়ার এই প্রাচীনতম ব্লাড ব্যাঙ্কে। ২০১১ সালে এই সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে মোট রক্ত সংগ্রহের পরিমাণ ছিল ৭৬ হাজার ৬৮৩ ইউনিট। আট বছরে জনসংখ্যা বেড়েছে, অসুখবিসুখ বেড়েছে, বেড়েছে রক্তের চাহিদাও। অথচ রাজ্যে সবচেয়ে বেশি রক্তের জোগান মেটায় যে ব্লাড ব্যাঙ্ক, সেখানে মোট রক্ত সংগ্রহের পরিমাণ দিন দিন কমার দিকে। আট বছরে ৬৫৭০ ইউনিট কমেছে।
তা সত্ত্বেও সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্তের মোট উপাদান সংগ্রহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১১ সালে যেখানে সংগৃহীত রক্ত এবং তার বিভিন্ন উপাদান ছিল মোট ১ লক্ষ ৮ হাজার ১৩৮ ইউনিট, সেখানে ২০১৮ সালে সংগৃহীত রক্ত এবং বিভিন্ন উপাদানের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৭৩৫ ইউনিট। অর্থাৎ আট বছরে বেড়েছে ৫৭ হাজার ৫৯৭ ইউনিট।
কিন্তু, যতই কম্পোনেন্ট সেপারেশনের মাধ্যমে এক ইউনিট হোল ব্লাড থেকে এক ইউনিট প্লেটলেট বা অনুচক্রিকা, এক ইউনিট আরবিসি, এক ইউনিট ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমার মতো বিভিন্ন অত্যাবশ্যকীয় রক্তের উপাদান মিলুক না কেন, রক্তের সংগ্রহ কমলে কমবে সবই। এমনই মত এই ব্লাড ব্যাঙ্কের টেকনিশিয়ান থেকে চিকিৎসকমহলের একাংশের। এক সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার জানালেন, পকেটে যদি টাকাই না থাকে, আপনি বাজারে গিয়ে কিনবেন কী? তাই রক্ত সংগ্রহ বাড়ালে এবং সেই রক্তের পুরোটাই কাজে লাগাতে ১০০ শতাংশ কম্পোনেন্ট সেপারেশন হলে আরও অজস্র মুমূর্ষু মানুষের প্রাণ বাঁচবে।
ব্লাড ব্যাঙ্কিং-এর সঙ্গে যুক্ত এক অভিজ্ঞ অফিসার জানালেন, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে এখন হোল ব্লাডের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়ার দিকে। অগ্নিদগ্ধ রোগীদের, প্রোটিনের সমস্যায় ভোগা রোগীদের যেমন অন্য কিছু নয়, দরকার প্লাজমা। ডেঙ্গুর মতো ভাইরাসঘটিত অসুখ, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়ায় যেমন দরকার প্লেটলেট, আবার হিমোফেলিয়ার মতো অসুখে দরকার অন্য কোনও উপাদান নয়, হোল ব্লাড থেকে তৈরি ক্রায়োপ্রেসিফিটেট।
রাজ্য রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের সদস্য অচিন্ত্য লাহা বলেন, আরও বেশি বড় বড় রক্তদান শিবিরে অংশ নিতে হবে সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্ককে। গাড়ি নেই, লোক নেই— এইসব যুক্তি দেখালে আখেরে রক্ত সংগ্রহ কমবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাজ্যের মানুষ। পেশাদারি মানসিকতা দেখাতেই হবে। এ বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তীর দাবি, প্রচুর নতুন ব্লাড ব্যাঙ্ক চালু হয়েছে। জেলাস্তরে রক্ত সংগ্রহও বাড়ছে। তাই সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কের মোট রক্ত সংগ্রহ কমছে। এছাড়া আমরা রক্তের উপাদান পৃথকীকরণ আরও বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছি।