পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বিজেপি-তৃণমূলের বিরুদ্ধে থাকা ভোট এক জায়গায় আনার জন্য সিপিএম অনেক আগে থেকেই এবার আসরে নামে। এব্যাপারে তারা অবশ্য মূলত নির্ভর করেছিল কংগ্রেসের উপর। তবে ঐক্য মঞ্চের কলেবরকে আরও বড় করার জন্য এজন্য বামফ্রন্টের তিন মেজ শরিক এবং কংগ্রেসের পাশাপাশি সহযোগী দল হিসেবে সিপিআইএমএল (লিবারেশন), এনসিপি এবং আরজেডি’র মতো তিনটি দলকে একটি করে হলেও আসন ছাড়ার মনোভাব নিয়েছিল তারা। লিবারেশনকে কৃষ্ণনগর, এনসিপি’কে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি এবং আরজেডি’কে উত্তর কলকাতা বা আসানসোলের মধ্যে কোনও একটি কেন্দ্র ছেড়ে দেওয়ার কথা প্রাথমিকভাবে ঠিকও করেছিল সিপিএম নেতৃত্ব। লিবারেশনকে দলে টানার পিছনে তাদের অপর বাম দল এসইউসি’কে পরোক্ষে এই বার্তা পাঠানোর কৌশল ছিল যে, তারা এই মঞ্চে না এসে কার্যত একঘরে হয়ে পড়তে চলেছে। আর লালুপ্রসাদ ও শারদ পাওয়ারের দলকে কাছে টেনে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এটা বোঝাতে চেয়েছিল যে, ব্রিগেডে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া সমাবেশের মঞ্চে যতই তেজস্বীপ্রসাদ বা পাওয়ার আসুন না কেন, তাঁদের দলের রাজ্য শাখা বামেদের পাশেই আছে। উল্লেখ্য, এসইউসি ইতিমধ্যেই স্বতন্ত্রভাবে রাজ্যে ৪২টি আসনেই লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কিন্তু বিধি বাম। কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া চালানোর মধ্যেই নিজেদের কোটার আসন সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমে আসছে দেখে এই ছোট দলগুলিকে আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয় সিপিএম। স্বয়ং বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান তথা সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসু নিজেই ওই দলগুলির নেতৃত্বকে এই অপারগতার কথা জানিয়ে দেন। তবে আরজেডি’র রাজ্য সভাপতি বিন্দ্যা রায় অবশ্য তাঁদের আসনের দাবি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেন লালুর নির্দেশে। বামেদের নয়, এই ভোটে মমতার পাশেই থাকার নির্দেশ রাজ্য আরজেডি নেতৃত্বকে দেন লালু-তেজস্বী। ক্ষুব্ধ লিবারেশন নেতৃত্ব দলের স্বীকৃত প্রতীক বাঁচাতে কৃষ্ণনগর এবং হুগলি কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। বাকি আসনগুলিতে তারা অবশ্য বাম প্রার্থীদের সমর্থন করবে বলে ঠিক করেছে। এনসিপি অবশ্য ঠিক করেছে, তারা এবার বাংলায় ভোটে লড়বে না। আর বিজেপি বিরোধী যে প্রার্থী যেখানে শক্তিশালী, তাকেই সমর্থকদের ভোট দেওয়ার নিদান দিয়েছে তারা। সেই অর্থে পরোক্ষে তারাও তৃণমূলের পাশেই দাঁড়াচ্ছে এ রাজ্যে।
গোড়া থেকেই সিপিএম তাদের আসন দেওয়ার ব্যাপারে কোনও কথা না দিলেও অপর বাম দল পিডিএস কিন্তু এই ঐক্য মঞ্চে শামিল হওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আলিমুদ্দিনের তরফে কোনও ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে শেষমেশ বুধবার তারাও ১২টি কেন্দ্রে লড়াই করার কথা ঘোষণা করেছে। মূলত সিপিএম ভেঙে তৈরি হওয়া এই দলটির রাজ্য সম্পাদিকা অনুরাধা দেব পুততুণ্ড স্বয়ং লড়বেন যাদবপুর কেন্দ্র থেকে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলছেন, আমরা শুরু থেকেই ঐক্যের পক্ষে সওয়াল করেছি। কিন্তু বিভিন্ন দলের চাহিদা এমন ছিল যে, গোটা পরিস্থিতিই বদলে যায়। তবে ভোটে সমঝোতা না হলেও আন্দোলন মঞ্চের ঐক্য বজায় থাকার আশা আমরা রাখছি। কারণ, বাম দলগুলি কেবল নির্বাচন সর্বস্ব রাজনীতি করে না।