নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বামেদের জেতা আসনে প্রার্থী দিয়ে জোট ভেস্তে যাওয়ার পথ সোমবারই সুগম করেছিল কংগ্রেস। মঙ্গলবার সেই পথে হেঁটে আরও ১৩টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে জোটের সম্ভাবনায় কার্যত ইতি টেনে দিল বাম শিবির। তবে জোট ভাঙার দায় যাতে তাদের উপর না চাপে, বরং কংগ্রেসের ঘাড়ে পড়ে, সেজন্য রাহুল গান্ধীর দলের জেতা চারটি আসনে এদিন পর্যন্ত প্রার্থী না দিয়ে নির্দিষ্ট বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বামেরা। এজন্য তারা কংগ্রেসকে সাড়া দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময়ও দিয়েছে। রাহুল গান্ধী-সোমেন মিত্ররা ইতিবাচক সাড়া না দিলে ওই চারটি আসনেও তারা প্রার্থী দেওয়ার জন্য তৈরি আছে বলে প্রকাশ্যেই জানিয়েছে। যদিও বামেদের এই প্রস্তাবে তেমন কর্ণপাত করছে না প্রদেশ কংগ্রেস। বামেদের জেতা দু’টি আসনে প্রার্থীপদের দাবি থেকে সরে না আসার কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে ওই প্রস্তাব কার্যত নস্যাৎ করেছে তারা। প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্রর কথায়, রাজ্যে কংগ্রেস দুর্বল বলে তাঁরা সম্মান খুইয়ে বামেদের করুণার পাত্র হতে চান না। তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ক্ষয়িষ্ণু বাম-কং জোট নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। তবে মোদির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওরা কেন জোট করতে পারল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।
বামেরা কংগ্রেসের জেতা চারটি সহ মোট ১৭টি আসন ছেড়ে রেখে প্রথম দফায় ২৫টি আসনে প্রার্থীর নাম গত সপ্তাহের শেষে ঘোষণা করে। ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর দাবি ছিল, সোমেনবাবুর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরই ওই তালিকা ঘোষণা করা হয়েছিল। সোমেনবাবুও সেদিন তা স্বীকার করেছিলেন। তারপর উভয় শিবিরের মধ্যে আরও আলোচনা চলে। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা থেকে জোট আবহ আমূল বদলে যায়। বামেদের শর্ত মতো ডজনখানেক আসনে লড়াই করার বিষয়টিকে দলের সম্মান হারানোর চোখে দেখেন সোমেনবাবুরা। শেষমেশ তাঁরা একক লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিলে এআইসিসি সোমবার রাতে তাতে সিলমোহর দিয়ে প্রথম দফায় ১১টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। তাতে সিপিএমের জেতা দু’টি সহ এবার বাম তালিকায় থাকা মোট ছ’টি আসনও রয়েছে। এদিন বিমানবাবুরা ফের আলোচনায় বসে আরও ১৩টি আসনের জন্য প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে দেন।