গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
কেন্দ্রে বিজেপি ও রাজ্যে তৃণমূল, এই দুই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে হবে। বাম ও প্রদেশ কংগ্রেসের এই অভিন্ন রাজনৈতিক লাইন দু’পক্ষকে কাছাকাছি নিয়ে যায়। যার জেরেই শুরু হয়েছিল দুই শিবিরের রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে আলোচনা। সেখানেই প্রথম জট পাকায় কংগ্রেসের দাবিকে ঘিরে। গতবার জেতা সিপিএমের দু’টি আসন রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে এবার কংগ্রেস প্রার্থী দেওয়ার দাবি জানানোয় শুরু হয় তরজা। উল্টোদিকে পুরুলিয়া, বসিরহাট যথাক্রমে ফরওয়ার্ড ব্লক ও সিপিআইয়ের মতো বাম শরিক চেয়ে বসায়, তা আরও জটিল আকার নেয়। দুই শিবিরের রাজ্য নেতাদের এই দাবি ও পাল্টা দাবিকে ঘিরে তৈরি হওয়া জট ছাড়াতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি আলোচনায় বসেন। সেই জটিলতা কিছুটা প্রশমিত হতে না হতেই বামফ্রন্ট একতরফাভাবে ২৫ আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে। তখন বিতর্ক চরমে পৌঁছয়। বীরভূম আসনে কংগ্রেসের চিকিৎসক সেলের আহ্বায়ক ডাঃ রেজাউল করিমকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাতারাতি রেজাউলকে সাংগঠনিক পদ থেকে অপসারিত করেন। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেসের সদস্যকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে অনৈতিক কাজ করেছে বামেরা। দার্জিলিং আসন বামেরা কংগ্রেসকে ছাড়লেও, কে তাদের প্রার্থী হবে, তা বামেদের মতামত নিয়ে করতে হবে বলে দাবি তোলেন রাজ্য বাম নেতারা। তাতে সোমেনবাবুরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কটাক্ষের সুরে বলেন, আমার বাড়িতে বিয়ে, আমি কোন বাড়ি থেকে পাত্রী আনব, তাও ঠিক করে দেবে বামেরা! এভাবে কোনও আলোচনা এগতে পারে না। কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার, দীপা দাসমুন্সি, শঙ্কর মালাকার, অমিতাভ চক্রবর্তী প্রমুখ বলেন, এভাবে জোট নিয়ে আলোচনা কংগ্রেসের পক্ষে অসম্মানজনক। পরে সেই অচলাবস্থার কথা জানাতে সোমেন দিল্লি যান। অবশেষে রাহুল-সীতারাম আলোচনায় শেষ চেষ্টা করেও সুরাহা হয়নি। ফলে, কংগ্রেস ও বামেদের তালিকা প্রকাশের পর জোট প্রক্রিয়াই ভেস্তে যায়।
কংগ্রেসের মতে, দুই দল সাংগঠনিকভাবে দুর্বল, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে একই অবস্থান নিয়েছে। তাই তাদের মধ্যে জোট করে নির্বাচনে লড়াই করতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কংগ্রেস পরিষদীয় নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, প্রথম থেকেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলতে শুরু করেন, তাঁরা জোট নয়, আসন সমঝাতো করছেন। তাই একসঙ্গে মঞ্চ ভাগাভাগি বা যৌথ প্রচারে তাদের আগ্রহ নেই। মান্নানের মতে, এই মানসিকতা নিয়ে সুষ্ঠু আলোচনা সম্ভব নয়।
বিমানবাবু এদিন নিজেদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে পাল্টা চাপের কৌশল নিয়েছেন। বলেছেন, কংগ্রেসের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। বামেদের জেতা আসনে বিশেষ করে রায়গঞ্জে তাঁদের বিদায়ী সাংসদ মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে ঘোষণা করা কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সির নাম তুলে নেবে। সোমেনবাবু বলেন, শুভবুদ্ধির উদয় আগে হলে একতরফাভাবে নিজেদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতেন না বিমানবাবুরা।