কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের দরজা বন্ধ হওয়ার জন্য এখনও তেড়েফুঁড়ে রাহুল গান্ধীর দলকে আক্রমণের রাস্তায় হাঁটেননি বিমানবাবুরা। বরং কংগ্রেসের জেতা চারটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে আরও ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন তাঁরা। এবিষয়ে বিমানবাবুর বক্তব্য, আমরা গোড়া থেকেই দেশ ও রাজ্যকে রসাতলে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ঐক্য তৈরিতে সচেষ্ট হয়েছি। এই দুই ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে থাকা ভোট যাতে এক জায়গায় রাখা যায়, সেজন্য কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হই। কিন্তু বিগত লোকসভা ভোটে একক লড়াই করে যে সব আসনে কংগ্রেস দেড় থেকে পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়েছে, সেগুলিও তারা এবার দাবি করে বসেছে। তবে তাদের সঙ্গে বোঝাপড়ার প্রাথমিক শর্তই, অর্থাৎ গতবার যে যার জেতা আসনে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়া, তারা মানেনি। তবু আমরা এখনও ওদের জেতা চার আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছি না। ইতিবাচক সাড়ার জন্য আরও ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করছি। সেটা পেলে ফের আলোচনা সাপেক্ষে আমরা আরও কিছু আসন থেকে আমাদের প্রার্থীদের সরিয়ে নিতে পারি। তবে সময়সীমার পর আমরা ওই চার আসনেও প্রার্থী দেওয়ার কথা বিবেচনা করব।
কংগ্রেস তাঁদের জেতা দুই আসনেই প্রার্থী দেওয়ার কথা জানানোর পর কেন তাঁরা এই মহানুভবতা দেখাচ্ছেন? সাংবাদিকদের এহেন প্রশ্নের জবাবে বিমানবাবু তাঁদের কৌশল বোঝাতে গিয়েই তিনি ১৯৭৭ সালে বাম-জনতা পার্টির সমঝোতা প্রক্রিয়া ভেস্তে যাওয়ার ইতিহাস সামনে আনেন। তিনি বলেন, রাজনীতির ময়দানে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমরা কতটা আন্তরিক, সেটা বাংলার মানুষ জানে। আমরা সেই লক্ষ্যেই এবার কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা চেয়েছিলাম। সেই লক্ষ্যে আমাদের আন্তরিকতা বোঝাতে বারবার কংগ্রেসকে নানাভাবে বার্তা দিয়েছি। এখনও চারটি আসন ছেড়ে রেখে সেই বার্তাই দিলাম। কিন্তু এটা আমাদের দুর্বলতা ভাবলে ভুল হবে। ১৯৭৭ সালে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারকে কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে হটানোর জন্য গোটা দেশে বিরোধীরা এককাট্টা হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। এরাজ্যে আমরা জনতা পার্টির সঙ্গে সমঝোতা করেছিলাম। জনতা পার্টি আমাদের থেকে দুটি লোকসভার আসন বেশি পেয়েছিল। তার মাস কয়েকের মধ্যে বিধানসভার নির্বাচনে তারা প্রথমে ৬০ শতাংশ আসন চেয়ে বসে। শেষ পর্যন্ত ৫৬ শতাংশে জেদ ধরে থাকে তারা। আমরা ৫২ শতাংশ পর্যন্ত আসন দিতে চেয়েছিলাম তাদের। শেষমেশ সমঝোতা প্রক্রিয়া ভেস্তে যাওয়ায় বামফ্রন্ট তৈরি করে আমরা এককভাবে লড়েছিলাম। কারা সেদিন ঐক্য ভেঙেছিল, তা বাংলার মানুষ সেই ভোটেই টের পাইয়ে দিয়েছিল। কংগ্রেস যেন সেই ইতিহাস ভুলে না যায়।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানদের মতো কংগ্রেসের তাবড় নেতারা অবশ্য বিমানবাবুর এই উপমাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান না। তাঁদের মতে, ১৯৭৭ সালের তুলনায় এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। আর বাংলার মানুষ ৩৪ বছর সিপিএম তথা বামেদের রাজত্ব দেখেছে। তাই ১৯৭৭ সালের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির আশা না করাই ভালো বামেদের।