বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
আগামী লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা প্রায় ৭৯ হজার। এই বুথগুলির মধ্যে কতগুলি স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত হবে, তা নিয়ে রীতিমতো রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। বিজেপি নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে, রাজ্যের সব বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। একই দাবি করেছে কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেস এই দাবির সম্পূর্ণ বিরোধিতা তো করেছেই। পাশাপাশি তৃণমূল অভিযোগ করেছে, রাজ্যের সব বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করার মধ্য দিয়ে রাজ্যবাসীকে অপমান করা হচ্ছে। দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা কতটাই না খারাপ। যদিও বাস্তব চিত্র একদমই আলাদা। রাজ্যের প্রতি এই অপমানের প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আন্দোলনও শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মহিলা সংগঠন দু’দিন অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নেয়। তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবীরা উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে এ ব্যাপারে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
বিজেপির দাবি মেনে রাজ্যের সব বুথকেই স্পর্শকাতরের তকমা দেওয়া হবে, এমন কোনও ইঙ্গিত শনিবারের বৈঠকে সুদীপ জৈন দেননি। তবে তিনি পুলিস সুপার ও জেলাশাসকদের বিষয়টি আরও বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করতে বলেছেন। বিরোধী দলগুলি স্পর্শকাতর বুথের দাবি করে যে তালিকা জমা দিয়েছে, সেগুলিও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকাও চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। পুলিস ও প্রশাসন আলোচনা করে সেই জেলায় স্পর্শকাতর বুথগুলিকে চিহ্নিত করে। এটা করার সময় ওই বুথে বিগত নির্বাচনের সময় কোনও গোলমাল হয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হয়। সেই নিরিখে ২৪ হাজারের কম সংখ্যক বুথকে সব মিলিয়ে স্পর্শকাতর হিসেবে উল্লেখ করে উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট বুথের ২৭-২৮ শতাংশ স্পর্শকাতর হওয়ার তকমা পেয়েছে।
তবে কোন বুথগুলি শেষ পর্যন্ত স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত হবে, সেব্যাপারে কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ভোটের চারদিন আগে এটা চূড়ান্ত করা হয়। স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করার আগে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট ছাড়াও রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর কমান্ডান্টদের রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হয়। জেলা প্রশাসন ও পুলিস ছাড়া লোকসভা কেন্দ্রের জন্য আসা সাধারণ ও পুলিস পর্যবেক্ষকদের মতামত নেওয়া হয়।
কমিশন আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যের সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বেশি থাকবে। কমিশনের নজরদারি এখানে বেশি হবে। রাজ্যের সব বুথকে স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যাও বাড়াতে হবে। ভোটের আগেই ১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে চলে এসেছে। আরও ৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী শীঘ্রই আসতে চলেছে। ভোটারদের আস্থা অর্জনের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী বিভিন্ন এলাকায় রুট মার্চ করছে। বিজেপি ও কংগ্রেস দাবি করলেও সিপিএম কিন্তু সব বুথকে স্পর্শকাতর চিহ্নিত করার দাবি তোলেনি। সিপিএম কমিশনের কাছে দাবি করেছে, সব ভোটার যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে।