বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এবার দিল্লিতে বিকল্প সরকারের লক্ষ্যে গোটা দেশের বিরোধীদের এককাট্টা করে লোকসভা নির্বাচনের ময়দানে নেমেছেন মমতা। এই অবস্থায় রাজ্যের সবক’টি আসন দখল করে দিল্লির সংসদে পৌঁছনোই তৃণমূলের প্রধান লক্ষ্য। স্বভাবতই সেই লক্ষ্যপূরণে রাজ্যবাসীর তো বটেই, দেশবাসীর কাছে একমাত্র মুখ মমতা। এদিন দলের কর্মিসভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বলেন, মনে রাখবেন, আমরা কেউ কারও লোক নই। সবাই আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোড়াফুল প্রতীকের প্রতিনিধি। তাই সব জায়গায় মনে রাখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমাদের প্রার্থী। এ কথা স্মরণে রেখেই ঝাঁপিয়ে পড়ুন। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম মনে করেন, ৪২টি আসনে একজনই প্রার্থী, তিনি দলনেত্রী। তাই ৪২ জনকেই দিল্লি পাঠাতে হবে। সেই দায়িত্ব ভুললে চলবে না। নির্দিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে কারও মনে দ্বিধা থাকতে পারে। কিন্তু নেত্রী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী দলের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের কাছে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, নেত্রীর প্রতি সংগঠনের কর্মীদের সেই নিরঙ্কুশ আস্থাই তৃণমূলের শক্তি। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, কর্মীরাই তৃণমূলের সম্পদ। তাঁরাই দলকে জেতাবেন, এই বিশ্বাস আছে।
তবে বিশ্বাসের পাশাপাশি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়া চলবে না বলে কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বলেন, দক্ষিণ কলকাতায় শেষ দফায় ভোট বলে গাছাড়া ভাব দেখানো চলবে না। উল্লেখ্য, এই দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্র থেকে দীর্ঘদিন ভোটে জিতে সংসদে গিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসার পর এই কেন্দ্রের অন্তর্গত ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন তিনি। এমনকী ২০০৪ সালে গোটা রাজ্যের মধ্যে একমাত্র এই কেন্দ্রের মানুষ তৃণমূলনেত্রীকে দিল্লিতে পাঠিয়েছিল। তাই দলের কাছে তো বটেই, গোটা রাজ্যের কাছেও মুখ্যমন্ত্রীর আবাসস্থল এই দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রের সঙ্গে তৃণমূলের ভাবাবেগও জড়িয়ে রয়েছে। রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এই কেন্দ্রে বিদায়ী সাংসদ। এবার তাঁর জায়গায় প্রার্থী হয়েছেন কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়। তাই কর্মীদের উদ্দেশে পার্থ বলেন, মালা নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতান। মনে রাখবেন, এবার শুধু একটা লোকসভা কে দখল করবে তার নির্বাচন নয়, দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব বজায় থাকবে কি না, সেটাও নির্ধারিত হবে আসন্ন নির্বাচনে। মালা রায় বলেন, দল যে দায়িত্ব দিচ্ছে সেটা যেন সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারি, সেদিকে নজর দিতে হবে। অতি-আত্মবিশ্বাসী হয়ে বসে থাকলে চলবে না।
দলের প্রচারের অভিমুখ কী হবে, সেটাও এদিন বাতলে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পার্থ বলেন, রাজ্যজুড়ে সমাজের সব অংশের মানুষের জন্য তৃণমূল সরকারের যে বিপুল কর্মযজ্ঞ, তা নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। সরকারি পুস্তিকা পড়ার ব্যাপারে কর্মীদের আরও তৎপর হতে বলেন তিনি। জানিয়ে দেন, মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, এবার ওয়ার্ডের কাউন্সিলারদের মধ্যে কে কত ভোটে দলের প্রার্থীকে এগিয়ে দিতে পারে, তার প্রতিযোগিতা হোক। কেননা এর পরেই তো পুর নির্বাচন রয়েছে। মানুষের কাছে গিয়ে বলুন, সারা বছর আপনাদের পরিষেবা দিই। আপনার একটা দিন তার প্রতিদান দিন। কেন্দ্রের পাঠানো বাহিনী নিয়ে বিশেষ ভাবার কোনও কারণ নেই। এই বিষয়ে পার্থের কটাক্ষ, যে অবস্থা হয়েছে তাতে মনে হয়, বিজেপি বাহুবলী হতে চাইছে। কাশ্মীরেও এত কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে কি না সন্দেহ।