পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
ফিরহাদ হাকিমের এই ঘোষণায় তৃণমূলের মধ্যে নাড়াচাড়া পড়ে গিয়েছে। কিছু কাউন্সিলারের মত, ভোট পরিচালনার দায়িত্ব তাঁদের হাতে দিতে হবে। কারণ, সেটা নাকি অনেক সময়ই তাঁদের হাতে থাকে না। সেই বার্তা তাঁরা ববি হাকিমের কাছে পৌঁছেও দিয়েছেন। কাউন্সিলারদের একাংশ যে দাবিই করুন না কেন, একটা বিষয় পরিষ্কার, আগামী দিনে টিকিট পাওয়ার জন্য তাঁদের এখনই প্রাণপাত করতে হবে। দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তাই ইতিমধ্যে বহু কাউন্সিলারই দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন, প্রার্থীকে নিয়ে প্রচারে নেমে পড়েছেন। শুরু হয়ে গিয়েছে বুথ কমিটি গঠন। একই সঙ্গে বুথ অনুযায়ী এজেন্ট তৈরির কাজ। যাঁদের ভালো করে স্ত্রুটিনি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভোটের জন্য গোটা মেশিনারি সাজাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূল স্তরে। সব বিরোধী যখন প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি, তৃণমূল তখন প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচারে নেমে পড়েছে।
রাজ্যে ১২৬টি পুরসভার মোট কাউন্সিলারের সংখ্যা ৩৬০০। তার মধ্যে প্রায় ৩৫০০ কাউন্সিলার তৃণমূলের। এই কাউন্সিলাররাই দলের স্থানীয় স্তরে প্রধান মুখ। তাঁরাই মূলত দলের সংগঠন করেন। তৃণমূল দল অনেকটাই কাউন্সিলার ভিত্তিক। দল একটা বিষয় বুঝতে পারছে, কাউন্সিলারদের ব্যবহার, আচার-আচরণ, দৈনন্দিন জীবনযাপনের স্টাইল, সাংগঠনিক ক্ষমতা মানুষের মধ্যে বিরাট প্রভাব ফেলে। কিছু কাউন্সিলারের জনসংযোগ ক্ষমতা যেমন দলকে শক্তিশালী করেছে, ভোট বেড়েছে, আবার কিছু কাউন্সিলারের দুর্ব্যবহার, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, বদলে যাওয়া জীবনযাপন মানুষের মধ্যে খারাপ প্রভাব ফেলেছে। সেই কথা মাথায় রেখেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাউন্সিলারদের সতর্ক করেছেন বলে ধারণা। সেই সঙ্গে পুরসভাগুলির নাগরিক পরিষেবার কাজ আরও বৃদ্ধি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে কাজ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ না জন্মায়।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোট মিটলেই দু’-এক মাসের মধ্যে হাওড়া, চন্দননগর, পানিহাটি, হাবড়া, ডায়মন্ডহারবার, বর্ধমান, বহরমপুর সহ ১৮টি পুরসভার ভোট হবে। আর আগামী বছর মে-জুন মাসে কলকাতা, সল্টলেক, দক্ষিণ দমদম, দমদম, বরানগর, কামারহাটি, মধ্যমগ্রাম, বারাসত, খড়দহ, টিটাগড়, বারাকপুর, উত্তর বারাকপুর, ভাটপাড়া, নৈহাটির মতো বড় পুরসভা সহ ৮২টি পুরসভার ভোট রয়েছে। তাই লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল কাউন্সিলারদের পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে বড় মাপকাঠি হিসেবে চিহ্নিত হবে। সেই কারণে আগামী পুরভোটের কথা মাথায় রেখে কাউন্সিলারদের এখন থেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ বৃদ্ধির উপরে জোর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের যেসব জনমুখী প্রকল্প রয়েছে, তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেও কাউন্সিলারদের বলা হয়েছে।
কাউন্সিলারদের মতো পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদেরও তাঁদের নিজেদের আসনে লিড দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের উপর নিচুতলার নেতাদের যে ভাগ্য নির্ভর করছে, সেটাই পরিষ্কার করে দিয়েছে দল। আর সে কারণেই জেলাস্তরের নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন মমতা। বিজেপি যেসব নেতাদের ‘টোপ’ দিচ্ছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। এছাড়াও কথা বলছেন সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম। যাতে কোনও পুরসভা বিজেপি ভাঙতে না পারে, তার জন্য পুরকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলছেন তাঁরা। দলত্যাগী বিধায়ক তথা চেয়ারম্যান অর্জুন সিংয়ের মতো আরও কেউ কেউ বিজেপিতে যেতে পারে বলে অনুমান করেই বিকল্প নেতৃত্বের খোঁজ চলছে। বারাকপুর মহকুমায় তরুণ ও নতুন নেতৃত্বের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।