বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বামেদের তালিকায় হেভিওয়েট বলতে প্রথমেই যাঁর কথা বলতে হয় তিনি হলেন যাদবপুরের প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সিপিএমের এই আইনজীবী নেতা দীর্ঘকাল ধরেই সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত। কলকাতার মেয়র ছিলেন একদা। গত কয়েক বছর অবশ্য হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টে সারদা-নারদ মামলায় জোরালো সওয়াল করে সিবিআই তদন্ত আদায় করার ব্যাপারে তাঁর নাম আরও বেশি করে আলোচিত হয়। একই সঙ্গে ভাঙড় আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে বিবিধ সংগঠনের ব্যানারে তাঁকে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। যাদবপুরের বাসিন্দা বিকাশবাবুর এহেন পরিচিতিতেই তাই ভরসা রেখেছে দল। বিকাশবাবু ছাড়া ইতিমধ্যেই অবশ্য ঘোষিত হয়েছে দলের পলিটব্যুরো নেতা মহম্মদ সেলিমের নাম। কংগ্রেসের দাবিকে ঘিরে রায়গঞ্জে অনেক টানাপোড়েনের পর প্রার্থী হলেও আগে ঘোষণার সুবাদে সেলিম ইতিমধ্যে প্রচারের কাজে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন বাকিদের থেকে। দমদমে এবার দল দাঁড় করাচ্ছে রাজ্য কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা প্রাক্তন এমপি নেপালদেব ভট্টাচার্যকে। দলের এই পোড়খাওয়া নেতাকে ময়দানে নামানো হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবের পরামর্শে।
এবার দলের তরফে কিছুটা হলেও চমক দেওয়া হয়েছে প্রয়াত নেতা তথা বিধানসভার অধ্যক্ষ হাসিম আব্দুল হালিমের ছোট ছেলে ডাঃ ফুয়াদ হালিমকে প্রার্থী করে। ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রে তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাঁকে লড়তে পাঠাচ্ছে সিপিএম। বীরভূম কেন্দ্রে ভূমিপুত্র হিসেবে প্রার্থী হবেন সাম্প্রতিক আমলে রাজ্যে সরকারি চিকিৎসক আন্দোলনের অন্যতম মুখ ডাঃ রেজাউল করিম। একদা পার্টি সদস্য রেজাউল মাঝে দলের সঙ্গে সরাসরি সংশ্রব রাখতেন না। কিছুদিন আগে তিনি কংগ্রেসের চিকিৎসক সেলের সঙ্গেও যুক্ত হন। তবে তাঁর সঙ্গে সিপিএমের সম্পর্ক কখনও খারাপ হয়নি। সেই কারণে তাঁকে উভয় শিবিরের প্রার্থী হিসেবে গণ্য করতে চাইছে আলিমুদ্দিন। দক্ষিণ কলকাতায় নন্দিনী মুখোপাধ্যায়, আরামবাগে শক্তিমোহন মালিক, বর্ধমান দুর্গাপুরে আভাস রায়চৌধুরী, বিষ্ণুপুরে সুনীল খাঁ, রানাঘাটে রমা বিশ্বাসের মতো সংসদীয় এবং দলীয় রাজনীতিতে পূর্ব পরিচিতদের উপরই ভরসা রাখতে বাধ্য হয়েছে নেতৃত্ব। জলপাইগুড়িতে ভগীরথ রায়, হুগলিতে প্রদীপ সাহা, উলুবেড়িয়ায় মাকসুদা খাতুনরা এই তালিকায় দলের নতুন মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন।
শরিক দলগুলির মধ্যে অবশ্য সিপিআই তাদের কোটার তিনটি আসনেই এবার নতুন মুখ এনেছে। বসিরহাটে দলের কেন্দ্রীয় নেতা পল্লব সেনগুপ্ত, ঘাটালে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তপন গঙ্গোপাধ্যায় এবং মেদিনীপুরে শ্রমিকনেতা বিপ্লব ভট্টকে বাছাই করেছে তারা। ফরওয়ার্ড ব্লক অবশ্য তাদের তিন কেন্দ্রে পুরনো মুখেই নির্ভর করেছে। পুরুলিয়ায় প্রাক্তন এমপি বীরসিং মাহাত এবং কোচবিহার ও বারাসতে দুই প্রাক্তন বিধায়ক গোবিন্দ রায় ও হরিপদ বিশ্বাসকে টিকিট দিয়েছে দল। আরএসপি’র তিন কেন্দ্রে রয়েছে নতুন ও পুরনোর মিশেল। আলিপুরদুয়ারে উচ্চশিক্ষিত আদিবাসী মহিলা নেত্রী এবং প্রাক্তন এমপি মনোহর তিরকের কন্যা মিলি ওঁরাও, বালুরঘাটে প্রাক্তন সাংসদ রণেন বর্মণ এবং জয়নগরে প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ নস্করকে এবার লড়তে দেখা যাবে আরএসপি’র টিকিটে।