নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আসন্ন লোকসভা ভোটে ৪২টি কেন্দ্রে উপযুক্ত প্রার্থীর অভাব রয়েছে বিজেপিতে। শুক্রবার দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কার্যত তা মেনে নিলেন। তাঁর কথায়, ভোটে জিতে লোকসভায় চলে যাওয়ার জন্য তেমন যোগ্য প্রার্থী নেই আমাদের। তাই যাঁদের এ ধরনের ভোটে জেতার অভিজ্ঞতা রয়েছে, অন্যদল থেকে যেসব বিজয়ী প্রার্থী আসছেন, তাঁদের খোলা মনে স্বাগত জানাচ্ছি। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন সম্প্রতি তৃণমূল থেকে আসা সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরা, অর্জুন সিং, দুলাল বর কিংবা সিপিএমের খগেন মুর্মুর মতো নেতাদের লোকসভা কিংবা বিধানসভায় জেতার অভিজ্ঞতাকেই বাজি ধরা হচ্ছে। যদিও বিজেপির অন্তরে জোর গুঞ্জন, ভোটের বাজারে বাইরে থেকে লোক এসে টিকিট নিয়ে চলে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের পুরনো নেতা-কর্মীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে, এমনও কথাও উঠতে শুরু করেছে। যদিও এদিন বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি। দিলীপবাবুর ব্যাখ্যা, বিগত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যজুড়ে প্রায় ৩৪ হাজার প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন। এরা প্রত্যেকেই বিজেপির স্থানীয় নেতা-নেত্রী। তবে পঞ্চায়েত আর লোকসভা ভোটে লড়াই করা এক বিষয় নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সংসদের নিম্নকক্ষের একটি সুনির্দিষ্ট ‘স্ট্যাটাস’ রয়েছে। তাই দেখেশুনে প্রতিটি আসনে প্রার্থী দিতে হবে। উল্লেখ্য, দল, দলের বাইরে, এমনকী ভিনরাজ্য এবং বিদেশ থেকেও এবারে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে লোকসভা ভোটে দাঁড়াতে চেয়ে শয়ে শয়ে আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এদিন তা স্বীকার করে নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ঝাড়াই বাছাই করে প্রায় ৪০০ নামের তালিকা প্রাথমিকভাবে রাখা হয়েছে। প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রের জন্য গড়ে পাঁচটি করে বিকল্প সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম থাকছে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার বেশি রাতে বিজেপি পার্টি অফিসে দলের নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব হাজির ছিলেন। প্রতিটি কেন্দ্র ধরে ধরে সম্ভাব্য নামের তালিকা নিয়ে আলোচনা হয়। দিল্লি সূত্রের দাবি, আগামী ১৭ এবং ১৮ মার্চ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি বৈঠকে বসতে চলেছে। সেখানে ১৮ মার্চ আরও কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে বাংলা নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সূত্রের দাবি, রাজ্যের প্রথম ও দ্বিতীয় দফার মোট পাঁচটি আসনের জন্য বিজেপির প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই রাতেই বহু প্রতীক্ষিত নামগুলি জানা যেতে পারে।
অন্যদিকে, এদিন ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিজেপিপন্থী অবসরপ্রাপ্ত আইপিএসরা ধর্নায় বসেছিলেন। রাজ্য সরকারের বৈমাতৃসুলভ আচরণের প্রতিবাদ সহ একাধিক দাবিতে ৩৬ ঘণ্টার এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা। যেখানে হাজির ছিলেন তৃণমূল ত্যাগী কর্ণেল সব্যসাচী বাগচি, অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস আর কে হান্ডা, সুজিত ঘোষ প্রমুখ। তবে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিস সুপার তথা সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া ভারতী ঘোষ উল্লেখযোগ্যভাবে এই ধর্না কর্মসূচিতে অংশ নেননি।