গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মামলার বয়ান অনুযায়ী, অত্যন্ত প্রভাবশালী কেউ বা কোনও গোষ্ঠীর রোষের বলি হয়েছিলেন অনুজ ওরফে আশিস ভকত ও কৌশিক রায়। ২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক জনের দেহ পাওয়া যায় সিঙ্গুরে, অন্যজনের বর্ধমানে। প্রথম জন গাড়ি ও দ্বিতীয় জন মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যায় বলে পুলিস দাবি করে। কিন্তু, অভিযোগ ওঠে, এমন দুর্ঘটনায় মৃতের শরীরের অবস্থা যেমন হয়ে থাকে, এক্ষেত্রে তা হয়নি। দ্বিতীয়ত, চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিতে কারচুপি হয়েছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ঘটনার তদন্তভার বেশ কয়েক বছর পরে সিবিআই-এর হাতে যায়।
২০১২ সালের ২ সেপ্টেম্বর। বর্ধমানে আলমগঞ্জের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে যায় রমেন সামন্ত। যার সঙ্গে আশিসের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। সাঁতারে যাওয়ার আগে কথায়-কথায় রমেন তার মাকে সেদিন বলেছিল, ‘আশিস ও কৌশিক মোটেই দুর্ঘটনায় মারা যায়নি। ফিরে এসে সব বলব।’ এ কথা উল্লেখ করে সুইমিং পুলের জল থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত রমেনের পিতা দেবকুমার হাইকোর্টে আসেন পুলিসি তদন্তে বীতশ্রদ্ধ হয়ে। কেন?
তাঁর আইনজীবী ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতকে জানান, জলে ডুবে মৃত্যু হলে মৃতের পেটে জল থাকবে। তা ছিল না। বলা হয়, পেটে বালি ছিল। কী করে পেটে বালি এল, তার ব্যাখ্যা নেই। পুলিস এমন তদন্ত করায় চাওয়া হয়েছিল সিআইডি তদন্ত। কিন্তু, তারা বলল, মৃতের পেটে ছিল ইথাইল অ্যালকোহল। অর্থাৎ, সে মদ খেয়ে জলে নেমে ডুবে মারা যায়। এমন তথ্য সামনে আসায় তথ্য জানার অধিকার অনুযায়ী আবেদন করে জানা যায়, যেদিন রমেনের ভিসেরা পরীক্ষা করা হয়, সেদিন আরও তিনটি ভিসেরা পরীক্ষা হয়েছিল। ফলে ইথাইল অ্যালকোহল মেলা ভিসেরা রমেনেরই, তার প্রমাণ কী? এজন্য ডিএনএ পরীক্ষা চাওয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়, ভিসেরা স্যাম্পেল নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। অথচ, তারপর নিম্ন আদালতে চার্জশিট দাখিল করার সময় সেই তদন্তকারীই ভিসেরা নষ্ট করার জন্য আদালতের অনুমতি প্রার্থনা করে। যা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে, তার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হল কেন? তার জবাব মেলেনি।
এখানেই শেষ নয়। ওই আইনজীবী জানান, মৃতদেহ উদ্ধারের সময় যে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি হয়েছিল, সেখানে মৃতের শরীরে অজস্র আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। অথচ, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে সেসব আঘাতের কোনও উল্লেখ নেই। এই অবস্থায় ময়নাতদন্তের ভিডিও চিত্র চাওয়া হয়। প্রথমে দিতে না চাইলেও নিম্ন আদালতের নির্দেশে একটি সিডি দেওয়া হয়। দেখা যায়, সেখানে কাটা-কাটা গোটা দশেক খণ্ডচিত্র রয়েছে। তা কোনওভাবেই মূল ভিডিওচিত্র নয়। এই মর্মে অভিযোগ এনে মূল ভিডিওচিত্র চাওয়া হলে তদন্তকারী জানিয়েছেন, থানার মালখানা থেকে সেটি চুরি হয়ে গিয়েছে।
এই অবস্থায় বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে রাজ্য এদিন জানায়, নিম্ন আদালতে ঘটনার শুনানি এখনও শুরুই হয়নি। সেই সূত্রে আদালত জানিয়েছে, এসপি পদমর্যাদার কোনও সিবিআই অফিসারের তত্ত্বাবধানে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত গুরুতর প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজে বার করতে হবে।