গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
লোকসভা ভোটের আগে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে-চুরিয়ে চলছে বোমা তৈরির কাজ। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসবে, ততই এমন বোমার চাহিদা বাড়বে। একাধিক দুষ্কৃতী গোষ্ঠী অবৈধ এই কারবারে জড়িত হয়ে পড়েছে। সীমান্ত লাগায়ো মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর ২৪ পরগনা, বীরভূম সহ রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকে বিগত কয়েকমাসে বিপুল পরিমাণ বোমা উদ্ধার করেছে পুলিস। নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে সেগুলি। যার সিংহভাগই ক্রুড বম্ব। যা পেটো নামেই পরিচিত। দূর থেকে ছুঁড়ে মারা হয় এই বোমা।
কিন্তু বোমার মধ্যে থেকে যে সমস্ত মশলার নমুনা মিলেছে, তাতে রীতিমতো উদ্বিগ্ন জেলা পুলিসের অফিসাররা। এতদিন তাঁরা দেখেছেন, এগুলি তৈরি করতে ব্যবহার করা হত সালফার, অ্যান্টিমনির মতো একাধিক সামগ্রী। যেগুলির একসঙ্গে মিশ্রণ ঘটিয়ে বারুদ তৈরি করা হয়। সম্প্রতি গোয়েন্দাদের নজরে এসেছে, পেটো বা দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি বোমায় ব্যবহার করা হচ্ছে সাদা সাদা একধরনের বিস্ফোরক। যা নিয়ে সন্দেহ জাগে বিশেষজ্ঞদের। প্রচলিত যে সমস্ত জিনিস ব্যবহার করা হয়, তা না থাকায় তাঁরা বুঝতে পারেন, নতুন কোনও ফর্মুলায় এই বোমা তৈরি হচ্ছে। এরপরই সংগৃহীত নমুনা বিশ্লেষণের কাজ শুরু হয়।
তা পরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞরা জানতে পেরেছেন, এগুলি হল চায়না বারুদ। যা বাজারে চাইনিজ এক্সপ্লোসিভ নামে পরিচিত। এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছে। এই বিস্ফোরকে কী থাকছে? পুলিস সূত্রে খবর, চায়না বারুদে সমস্ত ধরনের রাসায়নিক একত্রিত করা হচ্ছে। এর মধ্যে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কিছু রাসায়নিকও ব্যবহার করা হচ্ছে। যাতে তীব্রতা ও ভয়াবহতা বাড়ে। তাই এই বারুদ ব্যবহার করলে বিস্ফোরণের তীব্রতাও বেশি হচ্ছে। পাশাপাশি সমস্ত কিছুর সংমিশ্রণ থাকায়, আলাদা করে বোমার মশলা তৈরি করতে হচ্ছে না। মশলা ‘রেডিমেড’ মেলায় অনেক কম সময়ে, বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। চায়না বারুদ দিয়ে পেটো ছাড়াও অন্য ধরনের বোমা তৈরি করাও সম্ভব।
প্রাথমিকভাবে পুলিস জেনেছে, এই বিস্ফোরক বাইরে থেকে আসছে। মূলত সীমান্ত লাগোয়া জেলা দিয়েই বাংলাদেশে থেকে তা এরাজ্যে ঢুকছে। সূত্রের খবর, এই জাতীয় বিস্ফোরক চীন ও বাংলাদেশে তৈরি করা হচ্ছে। বাজারে অতি সহজেই তা মেলায়, বোমা তৈরিতে যুক্ত দুষ্কৃতীরা অনায়াসেই তা হাতে পেয়ে যাচ্ছে। একদিকে দাম কম, অন্যদিকে সক্রিয়তা বেশি হওয়ার কারণে চায়না বারুদদের চাহিদা এখন তুঙ্গে। বিভিন্ন জেলায় বিপুল পরিমাণ এই বারুদ মজুত করে রাখা হয়েছে বলে জানতে পারছেন অফিসাররা। তবে এই বারুদ এরাজ্যের কোথাও তৈরি হচ্ছে কি না, তা নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।