নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কৃষকবন্ধু প্রকল্প রূপায়ণের জন্য একটি বিশেষ সেল তৈরি করতে চলেছে কৃষি দপ্তর। এই সেলের দায়িত্বে থাকবেন একজন অতিরিক্ত কৃষি অধিকর্তা। সংশ্লিষ্ট আধিকারিক অবসর নিলেও তাঁকে পুনর্নিয়োগ করে এই কাজের দায়িত্বে রাখতে পারে দপ্তর। লোকসভা ভোটের আগে এখন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই প্রকল্পে কৃষকদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েত অফিস থেকে চেক বিলি করা হচ্ছে। প্রকল্প রূপায়ণের জন্য কোনও অর্থাভাব যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করা গিয়েছে। চলতি আর্থিক বছরের শেষ দু’মাসের জন্য এই খাতে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে চাষের জন্য আর্থিক অনুদান ছাড়াও কোনও কৃষকের মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে এককালীন দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। তবে প্রয়োজনীয় নথি সহ মৃত কৃষকের পরিবারকে আবেদন করতে হবে। কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আবেদন পেলে দ্রুত টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বজ্রাঘাতে বা সাপের কামড়ে মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা আগে থেকেই চালু আছে। এই দুটি কারণে মৃতদের একটা বড় অংশই কৃষক। তবে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মৃত্যুজনিত টাকা নিলে ওই দুটি কারণে আর আলাদা ক্ষতিপূরণ মিলবে না।
কৃষকবন্ধু প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই হেল্পলাইন চালু করেছে কৃষি দপ্তর। প্রতিদিনই বেলা ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই হেল্পলাইনে যোগাযোগ করা যাবে। একজন করে আধিকারিক ও কর্মী পালা করে এখানে কাজ করছেন। ছুটির দিনে হেল্পলাইনে কাজ করার জন্য বিশেষ রোস্টার তৈরি হয়েছে। কৃষকবন্ধু প্রকল্প নিয়ে ফোনে জিজ্ঞাসার উত্তর দিতে হচ্ছে এখানে। দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেকেই ফোন জানতে চাইছেন, তাঁরা জমি কিনলেও নাম পরিবর্তন করা হয়নি। আগের মালিকের নামে জমি রয়েছে। এক্ষেত্রে চাষ করার জন্য সরকারি সাহায্য মিলবে কি? কৃষি দপ্তর থেকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আর্থিক সাহায্য নিতে গেলে নিজের নামে জমি থাকতে হবে। এই সব ক্ষেত্রে দ্রুত জমির নাম পরিবর্তন করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে জমির মালিক ছাড়াও নথিভুক্ত ভাগচাষিদের চাষের খরচ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
একজনের নামে বিভিন্ন জায়গায় জমি থাকলে কি সাহায্য পাওয়া যাবে, তা জানতেও হেল্পলাইনে ফোন আসছে। উত্তরে বলা হচ্ছে, এক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। যেখানেই জমি থাক, তার পরিমাণ অনুযায়ী আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। মোট জমির পরিমাণ এক একর বা তার বেশি হলে বছরে পাঁচ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হবে। জমির পরিমাণ এক একরের কম হলে পরিমাণ অনুযায়ী টাকা মিলবে। তবে ওই টাকার পরিমাণ এক হাজার টাকার কম হবে না। জমির মালিকানার কাগজ থেকেই ওই পরিমাণ জানা যাবে। তার ভিত্তিতেই চাষের জন্য সাহায্য মিলবে।