বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
পিজি সূত্রের খবর, দু’বার অপারেশন করে তারপর সাফল্য আসে। দ্বিতীয়বার হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সঙ্গে অপারেশনে অংশ নেন কার্ডিওথোরাসিক বিভাগের সার্জেনরাও।
এদিন সন্ধ্যায় কমলবাবু বলেন, ডাক্তারবাবুরা আমার মতো একজন গরিবের পরিবারকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। ওঁদের হাতেপায়ে ধরেছিলাম, ডাক্তারবাবু, যেভাবেই হোক, আমার পা’টা বাঁচান! না হলে কাজ করব কী করে? খাব কী? বাড়িতে মা, বউ, আমার চার বছরের বাচ্চা মেয়ে রয়েছে। পুরো পরিবার যে ভেসে যাবে। এখনও বিশ্বাসই করতে পারছি না, পা রয়েছে।
অপারেশন করে আবেগতাড়িত সার্জারির অধ্যাপক ডাঃ দীপ্তেন্দ্রনাথ সরকারও। সোমবার বললেন, ওঁর পা যে বাঁচানো গিয়েছে, এই তৃপ্তিই চিকিৎসকের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এটাই পরের বড় কাজ করতে উৎসাহ জোগাবে। বেজায় খুশি ডাঃ সরকারের সাহায্যকারী পিজিটি ডাঃ কাইয়ুম খানও। পিজি’র এই সার্জারি প্রসঙ্গে রাজ্যের অন্যতম সেরা সার্জেন ডাঃ পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওঁদের অভিনন্দন জানাই। যথেষ্ট ভালো কাজ করেছেন। এখন আধুনিক সার্জারি বিদ্যাও বলছে, এমন ক্ষেত্রে আমরা পা বাঁচিয়ে রাখার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করে যাব।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রায় চার বছর ধরে কমলবাবুর পায়ে বাসা বেঁধেছে সারকোমা নামে ক্যান্সার আক্রান্ত টিউমার। ক্যান্সার যখন অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বদলে পেশি, হাড়, ফ্যাট প্রভৃতি জায়গায় বাসা বাঁধে— তাকে সারকোমা বলে। দেড় মাস ধরে পিজি’র আউটডোরে দেখানোর পর তাঁকে পিজি’র কার্জন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন চিকিৎসকরা। ২২ জানুয়ারি প্রথমবার ওটি হয়। সারাটিকা নার্ভ বাঁচিয়ে প্রায় ৭০-৭৫ শতাংশ টিউমার বাদ দেওয়ার পর আরও দূর যেতে গিয়ে সার্জেনরা দেখেন, এরপরের অংশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা ফিমোরাল আর্টারি। তার সামান্যতম ক্ষতি হলে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই গ্যাংগ্রিন! রোগীর পা বাদ দেওয়া ছাড়া দ্বিতীয় পথ থাকবে না। সেবারের মতো অপারেশনের ওখানেই ইতি। এরপর চিন্তাভাবনা করে এমআরআই করে টিউমার ও তার ভিতরে থাকা ধমনিগুলির অবস্থান সম্পর্কে আরও নিখুঁত ধারণা নিয়ে সার্জেনরা সিদ্ধান্ত নেন, কার্ডিওথোরাসিক সার্জারির সাহায্য নেওয়া হবে। পায়ের স্যাফিনাস ভেন থেকে তৈরি করা হবে গ্রাফ্ট। ফিমোরাল আর্টারি প্রয়োজনমতো কেটে, টিউমার আক্রান্ত অংশ বাদ দিয়ে, আর্টারিতে গ্রাফ্ট লাগিয়ে দেওয়া হবে। ডাঃ সরকারদের সঙ্গে একযোগে সিটিভিএস-এর ডাঃ শিল্পা বসুরায়, ডাঃ চায়না পালদের প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় সাফল্য আসে। আর তাতেই কমলবাবুর মুখে ভুবনভোলানো হাসি!