পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বড়মার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক বহু পুরানো। রাজনৈতিক শিবিরে এই ঠাকুরবাড়ি এখন দুই ভাগে বিভক্ত। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গাইঘাটা বিধানসভায় বড়মার ছোট ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরকে তৃণমূলের প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি জয়ী হওয়ায় তাঁকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়েছিল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্জুলবাবুর দাদা কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরকে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী করেন। তিনিও জয়ী হন। কিন্তু, এক বছরের মধ্যেই কপিলকৃষ্ণবাবুর মৃত্যু হলে ঠাকুরবাড়িতে বিজেপির প্রবেশ ঘটে। লোকসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের মন্ত্রিত্ব ছেড়ে মঞ্জুলবাবু বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর ছেলে সুব্রত ঠাকুর বিজেপির প্রার্থীও হন। অন্যদিকে, তৃণমূলের প্রার্থী হন কপিলকৃষ্ণের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুর। সুব্রতকে হারিয়ে মমতাবালাদেবীই জয়ী হন।
অসমে রাষ্ট্রীয় নাগরিক পঞ্জির খসড়া তালিকা থেকে ৪০ লক্ষ বাসিন্দাকে বাদ দেওয়ার ইস্যুতে আগেই মাঠে নেমেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের দাবি, ৪০ লক্ষের মধ্যে ছ’লক্ষ মতুয়া ধর্মের মানুষও রয়েছেন। মতুয়া ও নমঃশূদ্রদের জন্য পৃথক উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করে মুখ্যমন্ত্রী মাস্টার স্ট্রোকও দিয়েছেন। গত ১৫ নভেম্বর ঠাকুরবাড়ির পাশের মাঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছিলেন। মঞ্চে বড়মা হাজির করিয়ে তাঁকে বিশেষ বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারও দেওয়া হয়। ওই মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথাও ঘোষণা করেছেন। বারাসতের যাত্রা উৎসব থেকে গত ১১ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, এইসব কর্মকাণ্ড মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মতুয়াদের মন জয় করে ফেলেছেন। স্বাভাবিকভাবেই সামনে লোকসভা নির্বাচন। তাই মোদিকে দিয়ে ‘কাউন্টার’ করিয়ে নিজের ভোটব্যাঙ্ক রক্ষা চাইছে গেরুয়া শিবির। তাই ঠাকুরনগরকেই তারা নির্বাচন করেছে।
মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছোট ছেলে শান্তনু ঠাকুর মাসখানেক আগে সারাভারত মতুয়া মহাসংঘের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন ঠাকুরনগরে আসার জন্য। শান্তনুবাবু বলেন, সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী আসছেন। আগামী ২৮ জানুয়ারি আসবেন বলে ঠিক হয়েছে। ৮-১০ লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে। তিনি বলেন, মতুয়া সহ শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদান ইস্যুতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। প্রধানমন্ত্রী সেই বিল লোকসভায় পাশ করেছেন। রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে যাবে। রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসাবে নয়। উনি ওই ব্যাপারেই আসছেন।
বড়মা মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে গিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চেও কী যাবেন? উত্তরে তিনি বলেন, দেখুন বড়মাকে আমরা আমন্ত্রণ করব। কিন্তু, ওনার বয়স হয়েছে। ওনাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করব না। ওনাকে মঞ্চে তোলা নিয়ে ওরা (তৃণমূল) গণ্ডগোল করতে পারে।
তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য তথা বড়মা বীণাপাণিদেবীর বড় বউমা মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ওরা (বিজেপি ও শান্তনু ঠাকুরেরা) তো বড়মার খোঁজও রাখে না। বড়মা অসুস্থ। ১০০ বছর বয়স। এখন ওনাকে নিয়ে যাওয়া মানে তো জোর করা হবে। জানি না ওরা কী করবে।