কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
শনিবারের সভাতেই মমতা তাঁর ভাষণে মঞ্চে বসে থাকা চন্দ্রবাবু নাইডুকে বলেন, অন্ধ্রপ্রদেশে সভা ডাকুন। এই মহাজোটের চেহারা মানুষের সামনে তুলে ধরতে যেখানে সভা হবে, সেখানে আমি যাব। সেই সময়ে মঞ্চে বসে থাকা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, বিহারের তেজস্বী প্রসাদ, কাশ্মীরের ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ সিংকেও তাঁদের রাজ্যে সভা ডাকার কথা বলেন। গেরুয়া শিবিরকে সারা দেশে কোণঠাসা করতে গেলে এই সভাগুলিই যে প্রধান হাতিয়ার হতে পারে, তা ভাষণেই স্পষ্ট করে দেন নেত্রী। এসব কারণে শনিবারের সভার পর মমতার উদ্যোগকে রাজনৈতিক মহলের একাংশ অতীতের জয়প্রকাশ নারায়ণ বা বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংয়ের কংগ্রেস-বিরোধী জোটপ্রক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করছেন।
তবে পরবর্তী সভা দিল্লিতে হোক— এই চাওয়ার পিছনে আরও কিছু প্রেক্ষাপট রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, মার্চের শুরুতেই লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিতে পারে তারা। তাহলে হাতে সময় খুব কম। এই সময়ের মধ্যে নিজেদের বোঝাপড়া যেমন বাড়াতে হবে মহাজোটের দলগুলিকে, তেমনিই দেশের জনগণের সামনে একটি বিশ্বাসযোগ্য বিকল্পও হাজির করতে হবে। ভারতের মতো বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থায় এই কাজ করা বেশ কঠিন হলেও তা যে অসম্ভব নয়, ব্রিগেডের সমাবেশেই তার প্রমাণ মিলেছে। তাই আক্রমণের এই সুরকে সপ্তমে তুলতে অন্ধ্রপ্রদেশের অমরাবতী, পটনার গান্ধী ময়দানের বা দিল্লিতে রেকর্ড জমায়েত করার পরিকল্পনার কথা শনিবারই ব্রিগেড সভা থেকেই জানা গিয়েছিল। হাতে সময় কম থাকায় ঠিক পরবর্তী সভাটাই তাই দিল্লিতে করতে চাইছেন মমতা।
ব্রিগেড সমাবেশের সাফল্য এ রাজ্য ছাড়িয়ে সারা দেশেই প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে। তার ফলও মিলতে শুরু করেছে ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই। সূত্রের খবর, দেশের বেশ কিছু ছোটখাটো আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যে যোগাযোগ করেছেন মহাজোটের নেতাদের সঙ্গে। বিরোধী-ঐক্যের শক্তিশালী অবয়ব স্পষ্ট হতেই অনেকে যোগাযোগ করে এই মহাজোটের ছায়াতলে এসে লড়তে চাইছেন বিজেপি’র বিরুদ্ধে। এই আঞ্চলিক দলগুলি ভোট রাজনীতির ক্ষেত্রে এককভাবে লড়ে কোনও ফারাক গড়ার ক্ষমতায় না রাখলেও বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। তৃণমূল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শনিবারের ব্রিগেড সমাবেশে হাজির থাকা ভিনরাজ্য এবং ভিন দলের সমস্ত নেতাকে চিঠি লিখে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাবেন মমতা। তাঁর আহ্বানে যেভাবে বিরোধী নেতারা যোগ দিয়েছেন ব্রিগেড সমাবেশে, তাতে তিনি তৃপ্ত এবং আপ্লুত। সেই কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি আগামীদিনে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের জন্য পথ প্রশস্ত করতেই মমতার এমন উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।