পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
এবার এখনও পর্যন্ত কলকাতা সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ টানা ভালো শীত পেয়েছে। শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি তৈরি না হলেও ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে বেশিরভাগ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম ছিল। ডিসেম্বর মাসের শেষ থেকে এখনও পর্যন্ত মাঝেমধ্যে দু’-এক দিন ছাড়া রোজই কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম ছিল। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে কলকাতায় স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে। ডিসেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে মোটামুটি কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২-১৩ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। কখনও তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রির আশপাশে চলে এসেছিল। তবে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০.৬ ডিগ্রির নীচে নামেনি। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্র ৬-৭ ডিগ্রিতে নেমে আসার নজির আছে। পশ্চিমাঞ্চল সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কোনও কোনও জায়গায় এবারও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রির আশপাশে এসেছে।
জানুয়ারি মাসে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যাওয়ার নজির আছে। কিন্তু এবার সেটা হয়নি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এর কারণ এবার বঙ্গোপসাগরে বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি। এটির প্রভাবে শীতকালে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকে তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশের উপর দিয়ে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা প্রবাহিত হওয়ার সময় উত্তুরে হাওয়া কমজোরি হয়ে যায়। তখন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ে। এবার ঝঞ্ঝা প্রবাহিত হওয়ার সময় তাপমাত্রার বৃদ্ধি সামান্য হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে বড় জোর ১৪-১৫ ডিগ্রিতে পৌঁছিয়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প বেশি পরিমাণে না ঢোকার কারণে ঝঞ্ঝার প্রভাব থাকার সময় তাপমাত্রা বৃদ্ধি খুব বেশি হচ্ছে না।
এখন কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশের উপর দিয়ে একটি শক্তিশালী ঝঞ্ঝা প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানে তুষারপাত শুরু হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর ভারতে সমতল এলাকায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রবিবারও ১৩ ডিগ্রি ছিল। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। আজ, সোমবারও কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রির আশপাশে থাকার কথা জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
এবার ঝঞ্ঝাগুলির আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল যে সেগুলি সমতল এলাকার উপর বিশেষ অগ্রসর হচ্ছে না। পশ্চিম হিমালয়ের উপর দিয়ে গিয়ে সরে যাচ্ছে। উত্তর ভারতের সমতল এলাকায় ঝঞ্ঝা অগ্রসর না হওয়ায় সেখানে বৃষ্টিও কম হচ্ছে। ঘন কুয়াশা পড়ার প্রবণতা এবার সেখানে অনেক কম। ঝঞ্ঝার সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প ঢুকে ঘন কুয়াশা সৃষ্টি করে। ঝঞ্ঝা সমতল এলাকায় অনেকটা এগিয়ে এলে তার প্রভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি হয়। এবার এখনও পর্যন্ত শীতকালে অসময়ের বৃষ্টি এখানে নেই। বৃষ্টি হওয়ার পর উত্তুরে হাওয়া জোরদার হলে তাপমাত্রা অনেকটা নেমে যায়। এবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির আশপাশে না আসার এটা অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।