বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
দপ্তর সূত্রের খবর, রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ, জেলা ও মহকুমা হাসপাতালে পিপিপি মডেলে এমআরআই, সিটি স্ক্যান, ডিজিটাল এক্স-রে প্রভৃতি জরুরি রোগপরীক্ষা কেন্দ্র চলছে। বহু ক্ষেত্রেই সরকার সেইসব কেন্দ্রের যন্ত্র কিনে দিয়েছে। আর লোকবল (টেকনোলজিস্ট ও অন্যান্য), পরীক্ষার কাজ, রক্ষণাবেক্ষণ সহ বাকি দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার। যেসব জায়গায় এইসব পিপিপি সেন্টার আছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেখানে সরকারিভাবে এমআরআই, সিটি, ডিজিটাল এক্স-রে ইত্যাদি হয় না (ব্যতিক্রম হিসেবে পিজি, এনআরএস সহ হাতে গোনা কয়েকটি বাদে)। অথচ এইসব জায়গাতেও বহু সরকারি টেকনোলজিস্টকে (রেডিওডায়গোনজস্টিক) পাঠিয়েছে সরকার। যাঁদের কাজ সেরকম নেই। নয়তো যে কাজের জন্য নেওয়া, সেটাই করানো হচ্ছে না। কাজ থাকবেই বা কী করে? সরকারি যন্ত্রই যে নেই!
যেমন, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ২০ জনের বেশি এমটি (রেডিওডায়গনস্টিক) কাজ করছেন। কিন্তু, সরকারি ডিজিটাল এক্স-রে নেই। লোকবলের তুলনায় সাধারণ এক্স-রে হয় নামমাত্র। একই অবস্থা আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ২০ জনের বেশি এমটি (রেডিওডায়গনস্টিক) কাজ করেন। কিন্তু পিপিপি সেন্টার থাকায় সরকারি যন্ত্রে এক্স-রে হয় নামমাত্র। যেমন, রামপুরহাট জেলা হাসপাতাল। ১০ জনের বেশি এমটি (রেডিওডায়গনস্টিক) আছেন। কিন্তু, সরকারি যন্ত্র নেই। যে কাজের জন্য নেওয়া, সেই কাজই নেই। সেসব করছে পিপিপি সেন্টার। সিউড়ি জেলা হাসপাতালে আটজনের বেশি এক্স-রে, এমআরআই টেকনোলজিস্ট রয়েছেন। কিন্তু, সরকারি যন্ত্র নেই। সবই করছে পিপিপি সেন্টার। সরকারি টেকনোলজিস্টরা আউটডোরে, সুপার অফিসে অন্য কাজ করছেন। একই ধরনের সমস্যা উলুবেড়িয়া জেলা হাসপাতালেও। সরকারি এক্স-রে টেকনোলজিস্ট পাঁচের বেশি। কিন্তু, কাজ চলছে পিপিপি সেন্টারে। তাঁরা কী করবেন? এমন উদাহরণ রয়েছে অজস্র।
দ্বিতীয় সমস্যা হল, এইসব ‘যন্ত্রী’দের একটা বড় অংশকে দিয়েই করানো হচ্ছে অন্যান্য কাজ। যেমন, আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে এক্স-রে টেকনোলজিস্টদের দিয়ে অফিসের কাজ করানো হচ্ছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে এক্স-রে টেকনোলজিস্টরা অফিস ক্লার্ক ও ফার্মাসিতে কাজ করছেন। বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঁচজনের বেশি এ ধরনের টেকনোলজিস্ট থাকলেও তাঁরা কাজ করছেন অফিস এবং ফার্মাসিতে!
প্রশ্ন উঠেছে, কেন সরকারি অর্থ খরচ করে সরকারের শীর্ষস্তরের সম্মতি এনে এভাবে শয়ে শয়ে ‘যন্ত্রী’ নিয়োগ করে তাঁদের একাংশকে সঠিকভাবে ব্যবহারই করছে না দপ্তর? এ বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, সত্যিই এ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। এমন বহু জায়গায় সরকারি এক্স-রে, এমআরআই টেকনোলজিস্টদের পাঠানো হয়েছে, যেখানে পিপিপি সেন্টার রয়েছে। গোটা বিষয়টিই নতুন করে পর্যালোচনা হচ্ছে। ডায়গনস্টিক সেল হচ্ছে। ‘যন্ত্রী’দের তৃণমূলপন্থী সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোগ্রেসিভ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক সমিত মণ্ডল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতিতে চেষ্টার কসুর করছেন না। কিন্তু, দপ্তরের অদূরদর্শিতার জন্য সর্বত্র পরিষেবা পাচ্ছে না মানুষ।