উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
শনিবার সকাল থেকেই বুলবুলের সতর্কবার্তা এসেছিল প্রশাসন থেকে। কালিন্দী নদীর উল্টো দিকে বাংলাদেশ থেকে মুহুর্মুহু সতর্কবার্তা ভেসে এসেছিল এপারে। রাতভর আতঙ্কে তাই জেগেই ছিল ছোট সাহেবখালি গ্রাম। রাত আড়াইটা থেকে শুরু হয় প্রবল ঝড় ও বৃষ্টি। কোনওমতে ভোরের আলো ফোটার আগে ঝড়ের দাপট কিছুটা কমে। কিন্তু ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ আচমকাই ফের ঝড়ের তাণ্ডবনৃত্য শুরু হয়। চোখের সামনে বড় বড় গাছ ভেঙে পড়তে শুরু করে। বাড়ির উঠোনে উল্টে পড়া গাছ কাটতে বের হন প্রভাতীদেবীর ছোট ছেলে প্রদীপ মৃধা। কুঁড়ে ঘরের উঠোনে বসে ছেলেকে ঘরে ঢোকার কথা বার বার বলছিলেন মা। ছেলে ঘরে ঢোকার ঠিক আগের মুহূর্তে ঘরের উপর ভেঙে পড়ে প্রকাণ্ড ক্ষিরীশ গাছ। দেওয়াল ও খড়ের চালে চাপা পড়ে যান শীর্ণকায়া বৃদ্ধা। প্রায় ৪০মিনিটের চেষ্টায় খড়ের চাল কেটে তাঁকে বের করা হয়। সকলের চোখের সামনেই কয়েক মিনিটের মধ্যেই ছটফট করতে করতে মারা যান তিনি। ঘটনার বর্ণনা দিতে দিতেই কাঁদছিলেন প্রদীপবাবুর স্ত্রী সুলতাদেবী। তিনি বলেন, ওই সময় আমরা পাশের ঘরের দুয়ারে বসেছিলাম। ওই সময় শাশুড়ি বারবার আমার স্বামীকে ঘরে ঢুকতে বলেছিল। কিন্তু সকলের চোখের সামনে তিনি নিজে এইভাবে চাপা পড়েবেন কেউই বুঝতে পারিনি। এখনও সেই মুহূর্তের কথা ভাবলে আতঙ্কে শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
গ্রামের অপর বাসিন্দা অশোক মৃধাও শনিবার রাতের ভয়াবহতার কথা বলতে গিয়ে শিউরে ওঠেন। তিনি বলেন, মাটির চালা বাড়ি প্রবল ঝড়ে দুলছিল। দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত ছেলে কুণাল ও স্ত্রী মনীশাকে নিয়ে যে কোনও মুহূর্তে চাপা পড়তে পারি ওই ঘরের নীচে। ঘরের বাইরে থাকা বড় বড় গাছও নুইয়ে পড়ছে মাটিতে। প্রাণভয়ে বাড়ি থেকে ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। ভোররাতে নদীবাঁধ লাগোয়া ফাঁকা বাগানবাড়িতে আশ্রয় নিই। প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যেও সকাল ১০টা পর্যন্ত দাঁড়িয়েছিলাম। আতঙ্কে বাড়ি ফিরতে পারিনি। মুহূর্তে আইলার স্মৃতি ফিরিয়ে আনে বুলবুল। কিন্তু, বাড়িটা যে শেষপর্যন্ত অক্ষত থাকবে ভাবতে পারিনি। কুণাল জানায়, আগামী ১৩ তারিখ থেকে স্কুলে পরীক্ষা রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পড়াশুনা করা যাচ্ছে না। কবে বিদ্যুৎ আসবে তার কোনও ঠিক নেই। রাতে মোমবাতিই একমাত্র ভরসা। তাও সব দোকানে মোমবাতি পাওয়া যাচ্ছে না। কী করে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নেব কিছুই বুঝতে পারছি না।