দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
বোসপুকুর শীতলামন্দির ও রাজডাঙা নবউদয় সঙ্ঘের পুজো প্রতিবারই যথেষ্ট ভিড় টানে। ভিআইপি কার্ডেও লম্বা লাইন পড়ে যায়। কিন্তু এবার সেই ভিআইপি কার্ডধারী মানুষের লাইনের দেখা মিলবে না বলেই দাবি উদ্যোক্তাদের। বোসপুকুর শীতলামন্দির পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা তথা কাউন্সিলার বিজনলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভিআইপি কার্ডের বদলে মুখ্যমন্ত্রী ক্লাব ইনভাইটি কার্ড চালু করার অনুমতি দিয়েছেন। গত বছর যেখানে ৩০ হাজারের কাছাকাছি ভিআইপি কার্ড তৈরি করেছিলাম। এবার ৬-৭ হাজারের বেশি ক্লাব ইনভাইটি কার্ড তৈরি করব না। প্রয়োজন মতো বিলি করা হবে সেই কার্ড। রাডজাঙা নবউদয় সঙ্ঘের পুজো কমিটির সভাপতি তথা ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, আগে পাঁচ থেকে সাত হাজার ভিআইপি কার্ড তৈরি করে বিলি করেছি। এবার ৫ হাজারের মতো ক্লাব ইনভাইটি কার্ড তৈরি করেছি। বিশেষ কার্ডের প্রয়োজন ছিল। অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখার মতো শারীরিকভাবে ততটা সক্ষম নন। তাঁদের জন্য এই কার্ড তো প্রয়োজন ছিলই।
দক্ষিণ কলকাতার বড় পুজোর এক কর্তা বলেন, পুজোর সময় অনেক মন্ত্রী-আমলা-উচ্চপদস্থ সরকারি চাকুরে থেকে পুলিসের কর্তা পরিবার নিয়ে পুজো দেখতে আসেন। তাঁদের জন্য সব সময়ই একটা আলাদা ব্যবস্থা করা হয়। আবার বিভিন্ন দেশের মানুষ ঠাকুর দেখতে আসেন। অনাথ অথবা বৃদ্ধাশ্রমগুলি থেকে প্রতিমা দেখাতে নিয়ে আসে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এঁদের জন্য অন্তত ওই কার্ড রাখা প্রয়োজন। তবে তিনি এও বলেন, আইন থাকলে আইনের ফাঁকও থাকে। কার্ড বিলির সংখ্যা হয়তো কমছে। ‘ভিআইপি পাস’-এর বদলে ‘ক্লাব ইনভাইটি কার্ড’— সুবিধা তো একইরকম মিলবে।
উত্তর কলকাতার হাতিবাগান বা নলিন সরকার স্ট্রিট অথবা কাশী বোস লেনের নামী পুজোগুলির মাথায় বসে রয়েছেন কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তাঁর কথায়, আমার এলাকায় পাঁচটি নামী পুজো হয়। প্রতি বছর সবক’টি পুজো মিলিয়ে ১০ হাজারের কাছাকাছি ভিআইপি কার্ড তৈরি করে বিলি করা হয়। এবারও সংখ্যাটা প্রায় একই থাকছে। তবে এবার অনেক ভেবেচিন্তে বিলি করা হবে। অন্যদিকে, দক্ষিণ শহরতলির অন্যতম নামী পুজো নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক তথা কাউন্সিলার বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত বললেন, আমরা ক্লাব ইনভাইটি কার্ড অনেক কম তৈরি করছি। গত বছরও যেখানে প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি ভিআইপি কার্ড তৈরি করেছি, এবার সেখানে ১০-১৫ হাজারের বেশি কার্ড তৈরি করছি না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে মাথায় রেখে সেসব বিলি করা হবে। একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজোকর্তা স্বপন মহাপাত্র অবশ্য বলছেন, আমাদের পুজোয় আলাদা করে কোনও ভিআইপি কার্ড থাকে না। ঢাকি, পুরোহিতদের জন্য শুধু আলাদা কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া কিছু গেট পাস থাকে।
ত্রিধারা সম্মিলনীর মূল উদ্যোক্তা মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বললেন, ৮ হাজার ভিআইপি পাস তৈরি করে এসেছি। প্রয়োজনে সামান্য বাড়ানো হতো। এ বছর সর্বোচ্চ সাড়ে চার হাজার কার্ড হবে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কথাই ঠিক। কিসের ভিআইপি! প্রতিটি মানুষ যেভাবে লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখেন, বাকিরাও তাই দেখবেন। ক্লাব ইনভাইটি কার্ড বিশেষভাবে সক্ষম এবং পাড়ার বাসিন্দাদের বিলি করা হবে। স্পনসরদেরও দিতে হবে। বড়িশা ক্লাবের অন্যতম উদ্যোক্তা তথা কাউন্সিলার সুদীপ পোল্লের কথায়, ক্লাব ইনভাইটি কার্ড কত তৈরি করব, তা এখনও ঠিক করিনি। ভিআইপি পাস তৈরি করতাম ৭ হাজার। ক্লাব ইনভাইটি কার্ড এত করব না। যোধপুর পার্ক ৯৫ পল্লির মূল উদ্যোক্তা তথা মেয়র পারিষদ রতন দে’ও বলেন, যত ভিআইপি পাস তৈরি করা হতো, তত ক্লাব ইনভাইটি কার্ড তৈরি হবে না। যেক’টা তৈরি হবে, তা প্রয়োজনভিত্তিক বিলি হবে। প্রায় একই সুর সন্তোষপুর লেকপল্লির অন্যতম উদ্যোক্তা সঞ্জয় দাসের গলাতেও।