ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত বছর পুজোর বাজার তুলনামূলক খারাপ হয়েছিল। কিন্তু, এবার অবস্থা খুবই খারাপ। পুজোর একমাস যেখানে বাকি নেই, সেখানে ছুটির দিনেও বাজার বেশ ফাঁকা। কিন্তু, এমন অবস্থা কেন? ব্যবসায়ীরা বলেছেন, প্রতিটি সেক্টরে আর্থিক মন্দা চলছে। মানুষের হাতে টাকা নেই। পুজোর বাজার করবেন কী করে? আগে সারা মাসে আমাদের যেখানে রোজগার হত ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা, সেখানে গত কয়েক মাস ধরে আমাদের গড়ে ১২ হাজার টাকার বেশি রোজগার হচ্ছে না।
হাওড়ার মঙ্গলাহাটে পুজোর বড় অঙ্কের কেনাবেচা হয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এখান থেকে জামা-কাপড় কিনে নিয়ে যান। এখন প্রতি সোমবার পাইকারি বাজার বসে ও মঙ্গলবার খুচরা বাজার বসে। এখনও সময় আছে, এই আশায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা কিছু পাইকারি হারে জিনিস কিনলেও ছোট ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুবই খারাপ। গত বছরও পুজোর এক মাস আগে থেকে ময়দান চত্বরে মঙ্গলাহাটে হাঁটাচলা করা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, এবার সেই পরিচিত দৃশ্য উধাও। সারা বছর যেভাবে কিছু খরিদ্দার আসেন, এখনও সেই দৃশ্য।
মঙ্গলাহাটের জন্য জি টি রোডে যান চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে অন্যান্য বছর পুজোর আগে। কিন্তু, গত মঙ্গলবার বা এদিন যান চলাচল স্বাভাবিকভাবেই গাড়ি চলেছে। অর্থাৎ পরিচিত সেই ভিড় উধাও। জি টি রোডের ধারে রেডিমেড পোশাক নিয়ে বসা ব্যবসায়ী উৎপল ভৌমিক বলেন, আমরা ডোমজুড়, নিবড়া প্রভৃতি এলাকা থেকে রেডিমেড পোশাক কিনে এখানে বিক্রি করি। দাম কিছুটা সস্তা হয় বলে বিক্রিবাটাও প্রতি বছর ভালো হয়। কিন্তু, এবার অবস্থা খুবই খারাপ। যাঁরা জামাকাপড় তৈরি করেন, তাঁরা আমাদের উপর জিনিস কেনার জন্য চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু, বিক্রি না হলে টাকা শোধ করব কী করে?
একই কথা বললেন আর এক ব্যবসায়ী রমজান আলি। তিনি বলেন, আমরা বাড়িতে জরির কাজ করে এখানে মাল বিক্রি করি। কিন্তু, এবার সেভাবে বাজার হয়নি। ইদের সময়ও আমাদের ভালো বাজার হয়। কিন্তু, এবার তাও হয়নি। পুজোর বাজারের আশায় আমরা সারা বছর বসে থাকি। কিন্তু, বছরের অন্যান্য সময় যেমন টুকটাক বিক্রিবাটা হয়, এখন তাই হচ্ছে। অথচ কয়েক বছর আগেও পুজোর আগে আমরা মাল দিয়ে শেষ করতে পারতাম না। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও আমাদের কাছে জরির কাজ করা চুড়িদার, কুর্তি কিনে নিয়ে যেতেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু, তাঁরাও এবার কম মাল তুলেছেন। শুধু ছোট ব্যবসায়ীরা নন, শহরের বড় বড় কাপড়ের দোকানেও তুলনামূলক কম ভিড়। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এখনও বহু সংস্থায় পুজোর বোনাস হয়নি। তাই হয়তো কিছুটা দেরিতে বাজার শুরু হবে। তবে যাঁরা বোনাসের উপর নির্ভর না করেই প্রতি বছর বাজার করেন, তাঁদেরও সেভাবে দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। যা চিন্তায় ফেলেছে ব্যবসায়ীদের। সকলেরই চিন্তা, পুজোর বাজারের আশায় ঋণ নিয়ে অনেক মাল তুলেছেন অনেকে। এখন সেই ঋণের টাকা শোধ করবেন কী করে?