রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
তবে এদিন বিকেলেই তালিকায় থাকা ১২, দুর্গা পিতুরি লেনের দোতলা বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু করে পুরসভা। কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাতে কাজ হবে না বলে জানা গিয়েছে। আজ, মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হবে। যেভাবে এদিন তালিকার বাইরে থাকা একটি বাড়ি ধসে পড়ল, তাতে পুরো প্রক্রিয়া আরও দ্রুত শেষ করার ব্যাপারে সহমত হয়েছে কেএমআরসিএল, কলকাতা পুলিস এবং পুর-প্রশাসন। আজ কেএমআরসিএল-এর এক বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদল বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখবে। বাড়িগুলির বর্তমান অবস্থা কী, কোন বাড়িগুলি একেবারে ভেঙে ফেলা দরকার, কোন কোন বাড়িতে বাসিন্দারা এখনই এসে থাকতে পারবেন—এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এই প্রতিনিধিদল। সোমবার এই দলের সদস্যরা এ ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বৈঠকও করেন।
মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরির জন্য বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেন, স্যাকরাপাড়া লেন এবং গৌর দে লেনে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে আশপাশের হিদারাম ব্যানার্জি লেন, মদন দত্ত লেনেও। যে তিনটি লেন মূলত ক্ষতিগ্রস্ত, সেগুলিতে গত প্রায় ১০ দিন পুলিস ব্যারিকেড করে মানুষের যাওয়া-আসা বন্ধ করেছে। এখন এই তিন গলিতে শুধু হেলমেট মাথায় মেট্রো ও পুরসভার কর্মীদের আনাগোনা। বাকি সব শুনশান। মাঝেমাঝে বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটলে আতঙ্ক বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ। কলকাতা পুরসভার স্থানীয় ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সত্যেন্দ্রনাথ দে বলেন, আমরা প্রথম ধাপে পাঁচটি বাড়ি ভাঙার কাজে হাত দিচ্ছি। তবে সব মিলিয়ে ১৬টি বাড়ি পুরোপুরি ভাঙতে হবে বলে মনে হয়। সেগুলির মালিকদের অনুমতি নেওয়ার কাজ চলছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরির কাজ এগচ্ছে। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত মোট ১১৯টি পরিবারকে নথিভুক্ত করা হয়েছে। আরও কিছু পরিবার এই তালিকায় ঢুকবে বলে তিনি জানান। কেএমআরসিএল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রায় ৬০০ মানুষকে শিয়ালদহ, ধর্মতলা, চাঁদনি চক অঞ্চলের ২০টি হোটেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁদের চার বেলার খাওয়া এবং হোটেলের খরচ বহন করছে মেট্রো নির্মাণকারী সংস্থা কেএমআরসিএল। ফলে বিপুল অর্থও খরচ হচ্ছে তাদের।
কিন্তু ওই পাঁচটি বাড়ির একটিও ভাঙার কাজ এদিন শেষ হয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে বাড়িগুলি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলি প্রথম দিন থেকেই এমন অবস্থায় ছিল যে, পুলিস পরিবারের কাউকেই সেখানে ঢুকতে দেয়নি। হাইড্রলিক ল্যাডারের মাধ্যমে উপর দিয়ে ঘরে ঢুকে যতটা সম্ভব জিনিসপত্র যাতে তাঁরা বের করে আনতে পারেন, এদিন সেই চেষ্টা করা হয়েছে। এদিন দেখা যায়, ল্যাডারযুক্ত গাড়ি কোনওরকমে ঢুকেছে সঙ্কীর্ণ গলির মধ্যে। সেটির সাহায্যে বিভিন্ন জিনিসপত্র বের করে এনেছেন এই পাঁচ বাড়ির বাসিন্দারা। আশপাশের হোটেলগুলি থেকে বাসিন্দারা সকাল-সন্ধ্যা এসে ভিড় জমাচ্ছেন পুলিসের ব্যারিকেডের এপারে। তাঁদের চোখেমুখে শুধুই অসহায়তা।
প্রথম ছবিতে বউবাজারে ভেঙে পড়ছে বাড়ি। পাশে জিনিসপত্র নিয়ে অসহায় অবস্থায় রাস্তার উপর। ছবি: নিজস্ব চিত্র ও পিটিআই